চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
প্রকাশিত: ২২:২২, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
মারা যাওয়া সামিয়া রহমান
চাঁদপুরের কচুয় উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে সামিয়া রহমান নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আট শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহার ইয়াসমিন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন- উপজেলার তাতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, সাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, রোকেয়া আক্তার, কাজী শাকিরীন, ফয়েজুন নেছা ও ফাতেমা আক্তার।
এলাকাবাসী জানান, গত ২১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় খেলতে গিয়ে ময়লার স্তূপের আগুনে দগ্ধ হয় শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান। ঘটনার পাঁচদিন পর গত ২৬ জানুয়ারি মারা যায় সে। এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদন ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে আট শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহার ইয়াসমিন বলেন, “সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ওই বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের মধ্যে ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবার লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়। এটি একটি দুর্ঘটনা। এতে শিক্ষকদের অবহেলা ছিল। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আট শিক্ষককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানকে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “সুমন মজুমদার নামে এক কর্মচারীর (দপ্তরি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
নিহত শিশু সামিয়ার চাচা মাহমুদুল হাসান বলেন, “সামিয়ার শরীরে আগুন লাগলেও কোনো শিক্ষক পানি দেননি বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি। তারা শরীরের জামা কাটার জন্য কাঁচি আনতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। এতে সে (সামিয়া) আরো বেশি দগ্ধ হয়। এমনকি তার বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়নি। পরিবারকে না জানিয়ে ওই অবস্থায় সামিয়াকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানেই সামিয়ার মৃত্যু হয়।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ