মাঠে বসেই শিশুরা তাঁর গল্প শুনতে চাইল। এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে দিলেন কৃষক মনিরুজ্জামান নিজেই। তিনি তাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন দেশ, পতাকার বিষয়টি পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বললেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়চাঁদ মণ্ডল তাঁর গল্প শুরু করলেন। তিনি ৭ নম্বর সেক্টরের একজন যোদ্ধা ছিলেন। মা-বাবাকে না জানিয়ে পালিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। ভারতের লালগোলায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর দেশে এসে যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বলেন, তাঁদের শিলিগুড়িতে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর কথা ছিল; কিন্তু ওই সময় সেখানে প্রচুর ঠান্ডার কারণে তাঁদের পাঠানো হয়নি। অবশেষে তাঁরা থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়েই যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের একটি স্মৃতির কথা মনে করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি সেনারা রাজশাহীর গোদাগাড়ীর একটি স্কুলে বিভিন্ন এলাকা থেকে মেয়েদের ধরে এনে তালা দিয়ে রেখেছিল। তাঁরা খবর পেয়ে সেই স্কুল পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে দখলে নিয়ে তালা খুলে মেয়েদের উদ্ধার করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সেই গ্রামের মেয়েরা তাঁদের খাসি জবাই করে খাইয়েছিলেন।
জয়চাঁদ বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যখন বাড়িতে ফিরে আসি তখন মা-বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। আমি বললাম, দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমি ফিরে এসেছি। এখন কেন কাঁদছ? মা বললেন, “না বলে গিছিলি কেন বাবা!”’