Homeদেশের গণমাধ্যমেবিজয়ের চাওয়া এবং অন্যান্য কবিতা

বিজয়ের চাওয়া এবং অন্যান্য কবিতা


বিজয়ের চাওয়া

এক পৌঢ় বললেন, তিনি খাচ্ছেন
পরে কথা বলবেন
আমার শিহরিত মন বলল, ভুল দেখছি?
এবার পৌঢ়ের হাসিতে আলোকিত বস্তিটি
অষ্টাদশী মেয়েটি বলল, সে সুখেই আছে
তার হাসির ফোয়ারা নীল-আকাশে উজ্জ্বল মেঘ
এখন তার মুখখানি অবাধ বাংলাদেশ।

শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনির এক নৌকায় কয়েকটি শিশু
তাদের হাতে ব্যাগ—তাতে বই, কলম, পেন্সিল
হুর-রে!
স্কুলে যাওয়ার আনন্দে নদীর স্রোত এলোমেলো।

পথের গাছতলায় দেখা এক কবির সঙ্গে
তিনি লিখছেন, শুধুই লিখছেন
দূর থেকে দেখি পৃষ্ঠার কোণে লেখা, প্রতি জগন্নাথ
ইতি ফয়সাল
বুঝতে বাকি নেই আজকের বিজয় শুধু আমার নয়—সবার।

****

নূপুর: বিজয়ের মাপকাঠি

তোমার নূপুরের আওয়াজই বলে দেয়
আমাদের স্বাধীনতার সীমানা
আমাদের বিজয়ের সীমানা
পদ্মা-সিন্ধু-ভলগা পেরিয়ে কতদূর তার বিস্তৃতি
নাকি বুড়িগঙ্গার কালোজলে বিবর্ণ।

তোমার নূপুরে যদি বিষম ঝনঝন বাজে
ইয়াংসি, গঙ্গা কিংবা আমাজানে বিসর্জন হলে
তখন কষ্টগুলো বাড়ে
কাবিনের টাকা, কালি শুধু বৃথা মনে হয়
লাল কালিগুলো দগদগে হয় শুধু
বিজয়ের মহাকাব্য ম্লান।

তোমার বোনের কিংবা ভায়ের কান্না
তোমার বাবা কিংবা মায়ের কান্নাগুলো
অভিশাপ দেবে শুধু
চুয়াডাঙ্গা-রেসকোর্স-বৈদ্যনাথতলায় নির্মিত নূপুর
মিরপুর-সাভারে আহাজারি করবে।

****

আগস্ট ২০২৪: বুড়িগঙ্গা-পাড়ে উল্লাস

কী যে বিভীষিকাময় জুলাই-আগস্ট
এক ঘণ্টা যেন একদিন, একদিন যেন একবছর।
দু-হাজার কঙ্কাল, নিযুত পঙ্গু

আবু সাঈদরা হাত উঁচিয়েছে—প্রসারিত।
৫ আগস্ট রক্তগঙ্গায় অবশেষে বিজয়
বিরাণ ভূমিতে তবুও হাসি
ক্রীতদাসের নিজ বাসায় শুভ্র হাসি
বহু কষ্ট ডিঙিয়েও বজ্রমুষ্টি
বুড়িগঙ্গা-পাড়ে খেমটা উল্লাস
নতুন সূর্য

কোনো প্রহরী নেই, কোনো প্রভু নেই
সব থানার গেট খুলে গেছে
পুলিশ নেই, পিকেটিং নেই ঢাবিতে
মায়ের আহাজারিগুলো আজ ফুটন্ত গোলাপ
বেয়োনেটের মাথায় উদ্যম প্রজাপতির নাচ
শুধুই উল্লাস
কালো রাতের পর নতুন সূর্য

সেদিন প্রেমিকাকে বলেছি মাতো উল্লাসে
আজ কোনো প্রহরী নেই
আজ কোনো শিকল নেই
শিকলের ঝনঝন নেই তোমার পায়ে।

****

নূপুরের গতিই বিজয়ের অভিলাষ

এসো, এই বিজয়ে মাখি আলিঙ্গনে
শিকল যেন আর না থাকে তোমার পায়ে
বুনো চুল এলোমেলো
হয়েছিল রোকেয়ার শহরেই উল্লাসের আয়োজন
দ্বিগুণ বিজয়ে না অভিমান
না দর কষাকষি
তোমার নূপুরের অনুপ্রাসের সুষম গতি
বলে দেয় বিজয়ের পরিকাঠামো।

আমি দেখি না কোনো বন্ধু, আমি দেখি না কারো দাদাগিরি
আমি দেখি শুধুই তোমার নূপুরের গতি
তোমার নূপুরের গতিই বলে দেয় বিজয়ের অভিলাষ কতদূর
তারপর আমি ঠিক করি আমার গতিপথ।

****

বুড়িগঙ্গা বিপ্লব

তিস্তার মরুভূমি, পদ্মার খাঁ-খাঁ
মানতে পারিনি, মানিনি
তিস্তাপাড় দেখলেই দলছুট প্রেমিকার কথা মনে পড়ে
যে আমাকে ফেলে পালিয়েছে
পদ্মা দেখলেই হৃদয় কেঁদে দেয়
অবলীলায়, শিশুর মতো

এখনকার সময় উমামা ফাতেমার হুঙ্কারের
এখন হৃদয়ে আবু সাঈদ, ওয়াসিম—
মতিউরদের উত্তরসুরি

বুড়িগঙ্গা হোক রাইন—এই বিজয়েই।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত