বগুড়ায় বাড়ির দেয়ালে ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও সমন্বয়ক’ লিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক আহসান হাবিব সায়েমকে (২৪) হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে বগুড়া সদরের নিশিন্দারা ইউনিয়নের নওদাপাড়া এলাকার নিজ বাড়ির দেয়ালে ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও সমন্বয়ক’ লেখাটি চোখে পড়ে সায়েম ও তার পরিবারের সদস্যদের। এরপর থেকে তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবার রাতের কোনও একসময় বাড়ির দেয়ালে কেউ এটি লিখে হুমকি দিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সায়েম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
আহসান হাবিব সায়েম নওদাপাড়া গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা শাখার সাবেক সহ-সমন্বয়ক।
আহসান হাবিব সায়েম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোমবার রাতের কোনও একসময় দুর্বৃত্তরা আমার শয়নকক্ষের দেয়ালে “মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও সমন্বয়ক” লিখে গেছে। মঙ্গলবার সকালে আমার ভাবি লেখাটি দেখে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রসমাজকে ধ্বংস করতে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আজ আমাকে হুমকি দিয়েছে, কালকে আমার অন্য ভাইকে দিতে পারে। এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেবো। প্রশাসনের কাছে আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই। এই হুমকি দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’
সায়েমের বড় ভাই শাহাদত হোসেন বলেন, ‘সায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিল। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকার পতন আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা পরিকল্পিতভাবে এই হুমকি দিয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
বগুড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমানে কমিটি নেই। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়ার সাবেক সমন্বয়ক সাকিব খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আহসান হাবিব সায়েম সাবেক সহ-সমন্বয়ক। তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় আমরা বিব্রত এবং শঙ্কিত। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। হুমকির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, ‘খবর পেয়ে সায়েমের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দেওয়া হয়নি। হুমকির ঘটনায় কারা জড়িত, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তবে নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরাই এমন কাজ করেছেন। এখনও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী বাইরে আছেন, তাদের ধরতে ও প্রশাসনকে চাপে রাখতে এটি করা হয়েছে।