Homeদেশের গণমাধ্যমেবাংলাদেশে সেনা পাঠাক ভারত, দাবি দিল্লির প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক বৈঠকে

বাংলাদেশে সেনা পাঠাক ভারত, দাবি দিল্লির প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক বৈঠকে


বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বন্ধ করতে ভারত সরকারের কাছে দেশটিতে সেনাবাহিনী পাঠানোর দাবি জানিয়েছে দিল্লির একটি প্রভাবশালী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

‘রাষ্ট্রবাদী সনাতনী হিন্দু সংগঠন’ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিল্লির জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছে, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং হিন্দু নারীরা যেভাবে ধর্ষিতা হচ্ছেন তাতে ভারতের সামনে সেখানে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই।   

ওই সংগঠনের সভাপতি অরবিন্দ বিশ্বাস সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘১৯৮৭-তে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী যদি শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ থামাতে সে দেশে ভারতীয় শান্তিরক্ষী পাঠাতে পারেন, তাহলে আমরা মনে করি এখন বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষা করতেও অবিলম্বে সে দেশে ভারতীয় সেনা পাঠানো দরকার!’

শ্রীলঙ্কা ছাড়াও মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট আবদুল গায়ুমের সরকারকে বিদ্রোহীদের অভ্যুত্থান থেকে বাঁচাতে ভারত তাদের সৈন্য পাঠিয়েছিল, সে কথাও মনে করিয়ে দেন সংগঠনের অন্যতম আহ্বায়ক কল্যাণ কুমার রায়।

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভারত সৈন্য পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে, এমন একাধিক নজির আছে। একাত্তরের ঘটনা তো সবারই জানা। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে হিন্দুদের যেভাবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাতে ভারতের উচিত আবার সেখানে সেনা পাঠানোর কথা বিবেচনা করা।’

রাষ্ট্রবাদী সনাতনী হিন্দু সংগঠন আরও দাবি তুলেছে, বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে যে হিন্দুরা ভারতে আসবেন তাদের ঢালাওভাবে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে ভারত সরকার যে আইন (‘সিএএ’) করেছে তাতে প্রক্রিয়াগত জটিলতা আছে বলে দাবি করে অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা বলছি মাত্র এক পাতার একটি ফর্ম পূরণ করে বাঙালি হিন্দুদের (ভারতের) নাগরিকত্ব দিতে হবে।’

‘হিন্দু মানেই সে ভারতের নাগরিক, ফলে কোনও হিন্দুকে ‘বিদেশি নাগরিক’ বলে গ্রেফতার করা যাবে না!’ 

ওই সংগঠনটি আরও বলেছে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও অত্যাচার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে অথচ সে দেশের পুলিশ-প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়।

তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশে চলছে নির্বিচারে হিন্দু নিধন, অপহরণ, নারী নির্যাতন, জোর করে ধর্মান্তরকরণ, ধর্ষণ, বলপূর্বক চাকরি থেকে অপসারণ, ঘর-বাড়ি-দোকান-মঠ-মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করা, জোর করে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল। সম্পন্ন ও ধনী হিন্দুদের নামে চাঁদার নামে লুঠ করা হচ্ছে চাল-ডাল-চিনি ও লাখ লাখ টাকা। দিতে অস্বীকার করলে চলছে অত্যাচার, পেতে হচ্ছে দেশত্যাগ করার ধমকি!’

শ্রীলঙ্কায় শান্তিরক্ষী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল ভারতীয় সেনাদের। সাল ১৯৮৭ প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়াতে অনুষ্ঠিত ওই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসেরও অবিলম্বে মুক্তি দাবি করা হয়। ওই সন্ন্যাসীকে আইনি সহায়তা না দেওয়া হলে এবং তিনি মুক্তি না পেলে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও তীব্র আন্দোলন চালানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিতে হয়।

আমেরিকা থেকে মানবাধিকার কর্মী প্রিয়তোষ দে শুধু এই ইভেন্টে যোগ দিতেই দিল্লিতে এসেছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অ্যামনেস্টি বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন কিংবা বিবিসি-সিএনএনের মতো আন্তর্জাতিক মিডিয়া বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে কিছুই বলছে না– তাদের এই ভূমিকা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

গাজা বা সিরিয়াতে ‘সামান্য কিছু হলেই’ যারা সর্বনাশ হয়ে গেলো বলে চিৎকার জুড়ে দেয়, তারা কেন বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর ‘গণহত্যা’ হতে দেখেও নীরব– সে প্রশ্নও তোলেন এই অ্যাক্টিভিস্ট।

তবে ২০ জানুয়ারি আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রিয়তোষ দে।

মার্কিন মানবাধিকার কংগ্রেসের একজন কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত এই অ্যাক্টিভিস্ট আরও জানান, তাদের কাছে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের এমন বহু ভিডিও আছে যেগুলো এতই অমানবিক বা যন্ত্রণাদায়ক যে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশেরও যোগ্য নয়।

‘এই পরিস্থিতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার এবং ঢাকাতে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো দরকার’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত