জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে আর আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রাজনীতির জায়গা হবে না। আমরা মনে করি, ৫ আগস্টেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ রায় দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে দেশে কোনও নির্বাচন হবে না।
সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এনসিপির পক্ষ থেকে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কী ফায়সালা সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট করতে হবে। শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে শহীদ পরিবারগুলো মামলা করেছে। তাদের বিচারের বিষয়ে শহীদ পরিবারগুলোর আকাঙ্ক্ষা কী আমাদের তা বুঝতে হবে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিচার শেষ করে নির্বাচনের পর আরেকটা সরকার ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের পুনর্বাসন করবে না এ নিশ্চয়তা কে দেবে?
নাহিদ বলেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে, আমরা নাকি নির্বাচন পেছাতে চাই। আমরা বলবো, এগুলো বলে বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না। আপনারা বিচার ও সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করুন। সরকারকে বলবো, অবিলম্বে খুনিদের বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। কবে কোন প্রক্রিয়ায় বিচার হবে কোন প্রক্রিয়ায় সংস্কার হবে তার সুস্পষ্ট পদক্ষেপ আমরা দেখতে চাই।’
বর্তমান সংবিধান বাতিল ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আমরাই করেছিলাম। উপদেষ্টারা ও সেনাপ্রধান আমাদের কমিটমেন্ট দিয়েছিলেন বিচার ও সংস্কার করবেন। তারা তা ভুলে গেলে অবশ্যই আমরা জবাবদিহি চাইবো।’
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমাদের ভাইদের যারা হত্যা করেছে, আমরা যেন তাদের বিচার করে যেতে পারি। শেখ হাসিনাকে ধরে এনে বিচার করতে হবে।’
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে উত্তরার ছয় বছরের শিশু শহীদ জাবির ইবরাহিমের বাবা বলেন, ‘যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের বিচার আগে হতে হবে। সংস্কার করতে হবে। এর আগে নির্বাচন হবে না।’
সাভারের সাজ্জাদ হোসেনের মা বলেন, ‘আশুলিয়া থানার সামনে আমাদের সন্তানদের পুড়িয়ে হত্যা করেছে খুনিরা। তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনও নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা স্বজন হারিয়েছে। কিন্তু সন্তান হারাননি। আমরা সন্তান হারিয়েছি, তাই আমাদের আর্তনাদ তিনি বোঝেননি।’
জুলাই যোদ্ধা আশিক শাহরিয়ার বলেন, ‘খুনিদের বিচারে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবো। ঠাণ্ডা মাথায় সব করবো। কোনও বিশৃঙ্খলা করবো না।’