মাহবুবউল্লাহ: আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগুলো খুবই গুরুতর। বিরোধীদের দমন-পীড়ন, গুম, খুন, গণহত্যা এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের অভিযোগ উঠেছে। এগুলোর বিচার হতে হবে। তবে দলটির যেসব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এ রকম কোনো অভিযোগ নেই, তাঁদের রাজনীতি করতে না দিলে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। তাঁরা হয়তো রাজনীতি করতে পারবেন, সেটা বিচার সম্পন্ন হওয়ার পরে।
সমস্যা হলো আমাদের দেশে বিচারপ্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতির। এর ফলে আগামী নির্বাচনের আগে এই বিচার শেষ হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই বিচার যাতে দ্রুত হয়, সরকারের উচিত সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া। আসলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা না–করা নিয়ে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে কোনোটাই উত্তম সমাধান নয়।
১৫ বছরের একটানা শাসনে আওয়ামী লীগ সরকার যেমন অন্যায়-অত্যাচার করেছে, তেমনই এবার গণ–অভ্যুত্থানের সময় অনেক আন্দোলনকারীকে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ, বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, যা কিছু আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলোকে অন্যায়-অত্যাচারের প্রতীক হিসেবে মনে করেছে মানুষ। এ কারণেই আওয়ামী লীগের সবকিছুকে এখন বিরোধিতা করা হচ্ছে; পরিস্থিতি যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এমনটাই হওয়ার কথা। মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে। তখন হয়তো তারাও (আওয়ামী লীগ) রাজনীতি করার সুযোগ পাবে।
একটা রাজনৈতিক দলকে চেনা যায় ক্ষমতায় থাকাকালীন তার কর্মকাণ্ডের দ্বারা। তাই ১৯৭১ সালের আগের আওয়ামী লীগ আর ১৯৭১ সালের পরের আওয়ামী লীগ এক নয়। ’৭২ থেকে ’৭৫ সালে প্রথম আওয়ামী লীগ আমলেও দেশে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করা হয়েছিল। আর গত ১৫ বছরের দুঃশাসন বা ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে দলটি ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মধ্য দিয়ে সেটা সম্পন্ন হয়েছে।