ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না; তা যাচাই করা সহজ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের সঙ্গে পারমাণবিক শান্তি চুক্তি করতে চান বলার একদিন পর এ কথা বললেন পেজেশকিয়ান। এ ছাড়া তিনি পারমাণবিক বোমা তৈরি নিয়ে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার একটি ফতোয়া তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রীয় টিভিতে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পেজেশকিয়ানের ভাষণ প্রচার করা হয়। এর বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর সংবাদ প্রকাশ করেছে।
মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, যুদ্ধটা ইরানের জন্য লাভজনক কোনো ব্যবসা নয়। আমরা পারমাণবিক বোমাও বানাতে চাই না। পারমাণবিক বোমা তৈরির ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটা ফতোয়া দিয়েছেন। বলেছেন, ইসলামে পারমাণবিক বোমা নিষিদ্ধ। কারণ, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নীতিতে নিরপরাধ মানুষের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা যখন খুশি এসে আমাদের পরমাণু প্রকল্প ঘুরে যেতে পারে। তারা শতবার আসুক, পরীক্ষা করুক। আমরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। তবুও প্রতিদিন এটা বলা উচিত না যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। আসলে কে করেছে? জবাবটি হলো- ইসরায়েল। তারা ইরানের দিকে আঙুল তুলছে, অথচ আত্মরক্ষার কথা বলে নিজেরাই পরমাণু অস্ত্র বানিয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী সব দেশের ওপর তারাই আগে আক্রমণ চালাচ্ছে। আর তারা মানবাধিকার নিয়ে কথাও বলছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান অবশ্যই তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করবে। আমরা একে অপরকে সাহায্য করতে চাই। রাশিয়া, চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। এ জন্য পরিকল্পনা তৈরি এবং চুক্তি করতে চায় তেহরান।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর, ট্রাম্প ইরানের তেল বিনিয়োগের ওপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এরই মধ্যে পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে তিনি ইরানকে সতর্ক করেন।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের হুমকি দেয়, আমরাও তাদের হুমকি দেবো। যদি তারা আমাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে, তাহলে আমরা তাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করবো। খামেনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অতীতে আলোচনার অভিজ্ঞতা থেকেই বোঝা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র ‘বুদ্ধিমান বা বিচক্ষণ’ না। তারা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে চলে না।