Homeদেশের গণমাধ্যমেডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি


এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৭ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫৮ জনে। আজ ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যুর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যা সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে ২২ জনে। পাশাপাশি এই সময়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১২ জন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৪ জন।

এ ছাড়াও প্রতিবেদনে বলা হয়, একই সময়ে ঢাকা বিভাগে ১১ জন ছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু নিয়ে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৩৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৭ জন। আর ৫৭৮ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।

এ বছর মোট ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার বাইরের রোগী ৬০ হাজার ৩৬২ জন। আর ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ৪০ হাজার ১‌৯৬ জন ভর্তি হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশানিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ডেঙ্গু ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আমাদের সব জায়গায় হাসপাতালগুলোকে অ্যালার্ট (সতর্ক) করে দেওয়া আছে।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সকলকে সচেতন করতে। বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

উল্লেখ্য, দেশের ইতিহাসে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।

ডেঙ্গুজ্বর একটি এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সাধারণত ডেঙ্গুজ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলোর মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষরী রূপ নিতে পারে যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষরী জ্বর বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনোবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা দেয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়।

কয়েক প্রজাতির এডিস মশকী (স্ত্রী মশা) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যেগুলোর মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশকী প্রধানতম। ভাইরাসটির পাঁচটি সেরোটাইপ পাওয়া যায়। ভাইরাসটির একটি সেরোটাইপ সংক্রমণ করলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে, কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

কয়েক ধরনের টেস্টের মাধ্যমে এবং ভাইরাসটি বা এর আরএনএ প্রতিরোধী এন্টিবডির উপস্থিতি দেখেও ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয় করা যায়।

কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধী টিকা অনুমোদিত হয়েছে। তবে এই টিকা শুধু একবার সংক্রমিত হয়েছে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কার্যকর।

মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী বিভিন্ন আধারে, যেমন- কাপ, টব, টায়ার, ডাবের খোলস, গর্ত, ছাদ ইত্যাদিতে আটকে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢেকে রাখে এমন পোশাক পরিধান করতে হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত