ডলারের দাম আরও বাজারমুখী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এখন থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদিত ব্যাংক শাখাগুলো (এডি ব্রাঞ্চ) তাদের গ্রাহক ও ডিলারদের কাছে নিজেরা আলোচনার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৫ জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদিত শাখাগুলো থেকে প্রতিদিন দুইবার বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে সরবরাহ করবে। এক লাখ ডলারের বেশি কেনাবেচার তথ্য বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। এ ছাড়া বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার তথ্য বিকাল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ছকে এসব তথ্য জানাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ১২ জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার কেনাবেচার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিদিনের একটি ভিত্তিমূল্য বা রেফারেন্স প্রাইজ প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই ভিত্তিমূল্য প্রকাশ করা হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপবিষয়ক একটি নীতিমালাও প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে। ডলারসহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার দাম বাজারভিত্তিক রাখতে এই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে বাজারভিত্তিক দামের সুবিধা নিয়ে কেউ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে না পারে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের মধ্যে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী শীর্ষ ২৫ ব্যাংকের সঙ্গে সভা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব পরিকল্পনার কথা জানানো হয়, যা প্রজ্ঞাপন আকারে মঙ্গলবার জারি করা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এক লিখিত বার্তায় জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে প্রবাসী আয় আহরণের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিনিময়ের হার সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা নির্ধারণ করেছে। ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে এই বিনিময় হার তদারকির ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
ডলারের বাজারে প্রায় আড়াই বছর ধরে অস্থিরতা চলছে। মার্কিন এই মুদ্রার দাম এই সময়ে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় উঠেছে।