Homeদেশের গণমাধ্যমেট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট কেন বললেন কমলা?

ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট কেন বললেন কমলা?


যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে ওয়াশিংটন ডিসিতে ভাইস-প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থীর প্রতি এমন আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক চিফ অব স্টাফ জন কেলিকে উদ্ধৃত করে কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে মানসিক ভারসাম্যহীন ও অস্থির বলেও অভিহিত করেছেন।

জন কেলি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। কমলা হ্যারিস জন কেলিকে উদ্ধৃত করে আরও বলেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফ্যাসিস্টের সাধারণ সংজ্ঞা খাপ খায়।

কমলা হ্যারিস অভিযোগ করেছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হিটলার-প্রীতি রয়েছে। তিনি বলেন, তার এই প্রতিদ্বন্দ্বী ‌‘একচেটিয়া ক্ষমতা’ চেয়েছিলেন।

পরে তাকে আবারও জিজ্ঞেস করা হয় যে ট্রাম্প ফ্যাসিবাদী, এটা তিনি বিশ্বাস করেন কি না, জবাবে তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন। এদিকে কমলা হ্যারিসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, তিনি (কমলা) বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথা বলেই যাচ্ছেন। আমাকে অ্যাডলফ হিটলার এবং তার মনে মনে আরও যা যা কিছু আছে তাই বলে ডাকতে চাচ্ছেন। এ সময় তিনি কমলা হ্যারিসকে কমরেড কমলা হ্যারিস হিসেবেও সম্বোধন করেন।

তবে তিনি কমলা হ্যারিসকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ হিসাবেও বর্ণনা করেছেন। এদিকে ট্রাম্পের প্রচারণা দল ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে। প্রচারণা দলের মুখপাত্র স্টিভেন চেয়াং বলেছেন, কমলা হ্যারিস ক্রমশঃ মরিয়া হয়ে উঠছেন। কারণ তিনি নড়বড়ে হয়ে পড়েছেন এবং তার প্রচারণা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই অবস্থায় এক পক্ষ আরেক পক্ষের নামে বিষোদগার করবে, এটা এক রকম স্বাভাবিক প্রবণতা।

এ ধরনের বাকযুদ্ধের মূল লক্ষ্য থাকে সমর্থকদের ভোট দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করা ও প্রতিপক্ষের প্রচারাভিযানকে ব্যাহত করা। ডেমোক্র্যাট গ্রুপ থার্ড ওয়ে’র পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট ম্যাট বেনেটের মতে, কমলা হ্যারিস কেন জন কেলির বক্তব্যকে ধরে মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট। কমলা হ্যারিসকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, তিনি এখন যা করছেন, তা কৌশলগত।

তার এটা নিশ্চিত করা দরকার ছিল যে, জন কেলি যা বলেছেন, ভোটাররা যেন তা জানতে পারেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের এই সর্বশেষ মন্তব্যটিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রচারণা কৌশলও বলা যেতে পারে, যাতে করে দ্বিধাদ্বন্দে থাকা রিপাবলিকান সমর্থকরা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দেয়।

নির্বাচন নিয়ে করা বিভিন্ন জরিপে এটাই দেখা যাচ্ছে যে, এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে। দেশটির বড় বড় শহরগুলোর আশপাশে ফিলাডেলফিয়া, ডেট্রয়েট, ফিনিক্সের মতো ছোট শহর আছে।

সেসব শহরতলীতে শিক্ষিত কর্মজীবীদের বসবাস। তারা বরাবরই রিপাবলিকানের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এবার জরিপগুলো থেকে সেসব স্থানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার ঘাটতি টের পাওয়া গেছে। বেনেট বলেন, অসন্তুষ্ট রিপাবলিকানদের বিশেষ করে যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন কী দেবেন না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তাদের দলে চানতে চাইছেন কমলা হ্যারিস।

নেব্রাস্কার ডেভিন ডেভেলাসকো নামের একজন বরাবরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি বলছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পদে অযোগ্য। যদিও তিনি মনে করেন, কিছু রিপাবলিকান আছেন যারা তার মতো কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেবেন।

তবে, তিনি এও বলেন যে সাবেক প্রেসিডেন্ট সম্বন্ধে করা দাবিগুলো একঘেয়ে। জন কেলির মন্তব্যকে ইঙ্গিত করে তিনি বিবিসিকে বলেন, এই প্রতিবেদন যখন প্রকাশ হলো আমি এতে হতবাক হইনি। এতে খুব বেশি পরিবর্তন নেই।

রিপাবলিকান স্ট্র্যাটেজিস্ট ডেনিস গ্রেস গিটশাম বলেন, ভোটাররা ২০১৬ সাল থেকে ট্রাম্প সম্পর্কে একই ধরনের বক্তব্য শুনে আসছেন। তাই মোড় ঘোরাতে হলে নতুন কোনো বিতর্ক লাগবে।

তিনি বিবিসিকে বলেন, আপনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব পছন্দ করেন না বলে যদি তার বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে আপনি একজন নির্ধারিত ভোটার। কিন্তু আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি তার নীতিগুলো দেখছেন এবং তা আপনার কাছে ভাইভ বা ব্যক্তিত্বের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তবে আপনি সেই ব্যক্তির সঙ্গে হাঁটতে যাচ্ছেন যিনি হোয়াইট হাউজে থাকাকালীন সবচেয়ে ভালো করেছেন।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত