হামজা চৌধুরীকে নিয়ে দারুণ কিছু করে দেখানোর বিশ্বাস নিয়ে ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ। ইংলিশ ফুটবলে খেলা মিডফিল্ডার মাঠে তার ছাপ রাখলেও লাল সবুজরা আফসোস নিয়ে মাঠ ছাড়লো। প্রথমার্ধে একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট করে জিততে না পারার হতাশায় ডুবলো বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষ হলো গোলশূন্য ড্রয়ে।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে প্রথমার্ধে এভাবে একের পর এক গোল মিস করবে বাংলাদেশ, তা কে ভেবেছিল? ম্যাচের বড় অংশ জুড়ে রাকিব-শাহরিয়ার ইমন-মজিবর রহমান জনিরা সুযোগ পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। স্বাগতিকদের গোলকিপার বিশাল কাইতের বদান্যতা কম নয়। তারই ভুলে একাধিক সুযোগ আসে। কিন্তু কিছুতেই শিলংয়ের মাঠে গোল আসেনি। ভারতও পারেনি গোল দিতে। বিরতিতে যাওয়ার আগে তাই গোলশূন্য স্কোরলাইন রেখে দুই দল ড্রেসিংরুমে যায়।
জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ম্যাচের অধিকাংশ সময়জুড়ে বাংলাদেশের আধিপত্য। কিক অফের ১৫ সেকেন্ড পরেই সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। দারুণ এক সুযোগ পেয়ে অবিশ্বাস্যভাবে তা নষ্ট করেন জনি। শাহরিয়ার ইমন কিক অফের শট নিলেন বল যায় হামজার উদ্দেশ্যে। তিনি বল রিসিভ করেই লং পাস বাড়ালেন বাঁ দিকে। জনি যদিও প্রস্তুত ছিলেন না। প্রায় বাই লাইনে ছুটে গিয়ে গোলকিপার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি, জনি ফাঁকায় বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে বাইরের জাল কাঁপান।
৯ মিনিটে শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে শাহরিয়ার ইমন মাথা ঘুরিয়ে হেড নিলেও তা পোস্টের দূর দিয়ে যায়। ১২ মিনিটে বাংলাদেশের সামনে আবারও সুযোগ আসে। গোলকিপার বিশাল কাইত ঠিকমতো গোলকিক নিতে পারেননি। সামনে থাকা শাকিলের পিঠে লেগে চলে যায় বক্সের ভেতরে থাকা হৃদয়ের পায়ে। এই মিডফিল্ডার লক্ষ্যে শট নিলেও শুভাশিষ বোস গোল হতে দেননি।
১৮ মিনিটে রাকিবের কাটব্যাকে কেউ শট নিতে পারেননি। এরপর মোরসালিনের ক্রসে শাহরিয়ার ইমন লাফিয়ে উঠে হেড করেন। তবে তা হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। যার কারণে ডেডলক খোলেনি।
২১ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন এই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা তপু বর্মণ। তার জায়গায় নামেন রহমত মিয়া। ফ্রি কিক থেকে লিস্টন কোলাসোর শট হৃদয় হেড দিয়ে ক্লিয়ার করতে গিয়ে আর একটু হলেই নিজেদের পোস্টে জড়িয়ে দিচ্ছিলেন!
২৮ মিনিটে প্রথমবার লক্ষ্যে বল রাখে ভারত। কিন্তু কোলাসোর সহজ-সরল শট মিতুলের তালুবন্দি করতে সমস্যা হয়নি।
দুই মিনিট পর ভারত প্রায় গোল পেয়েই যাচ্ছিল। কোলাসোর ক্রসে উদান্তা সিংয়ের হেড গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন শাকিল। ফিরতি বলে ফারুক চৌধুরীর দুর্বল শট মিতুল তালুবন্দি করেন।
৪১ মিনিটে বাংলাদেশ আবারও আক্রমণে। তবে এবারও সুযোগ নষ্ট করেন জনি। মাঝ মাঠ থেকে শাহরিয়ার ইমনের হেড পাস থেকে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন জনি। সামনে শুধু স্বাগতিকদের গোলকিপার। কিন্তু জনি আগুয়ান গোলকিপারের সামনে থেকে পোস্টে আর শট নিতে পারেননি। গোলকিপার কাইত ক্লিয়ার করলেন অনায়াসে।
এর আগে বাংলাদেশ একাদশে ইংলিশ লিগে খেলা হামজা দেওয়ান চৌধুরীর অভিষেক হয়েছে। এছাড়া একাদশে ফিরেছেন তারিক কাজী, শেখ মোরসালিন, মজিবর রহমান জনি ও শাহরিয়ার ইমন।
বাংলাদেশ একাদশ: মিতুল মারমা, তপু বর্মণ (রহমত মিয়া), মোহাম্মদ হৃদয়, শেখ মোরসালিন, হামজা দেওয়ান চৌধুরী, শাহরিয়ার ইমন, রাকিব হোসেন, শাকিল আহাদ তপু, তারিক কাজী, মজিবর রহমান জনি ও সাদ উদ্দিন।