গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ‘অসংযত হামলা’র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। গত ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। শনিবারের (২ নভেম্বর) হামলায় জাবালিয়ায় শত শত মানুষের আশ্রয় নেওয়া দুটি আবাসিক ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার সকালে পোলিও টিকাদান কার্যক্রমে কর্মরত ইউনিসেফের এক কর্মীর ব্যক্তিগত গাড়ি জাবালিয়া-এলনাজলা দিয়ে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে কর্মীটি আহত হননি। তবে তিনি গভীরভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের শেখ রাদওয়ান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারে শনিবার স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েল। ওই সময় সন্তানদের পোলিও টিকা দিতে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন শিশুদের বাবা-মা। ওই হামলায় ৪ শিশুসহ ৬ জন আহত হয়েছে।
হামলাটি এমন সময়ে ঘটেছে যখন দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত এই টিকাদান কার্যক্রমের জন্য একটি মানবিক বিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল।
ইউনিসেফ বলেছে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী, বেসামরিক মানুষ ও তাদের অবকাঠামো অর্থাৎ আবাসিক ভবন ও মানবিক কর্মী এবং তাদের যানবাহন সব সময় সুরক্ষিত থাকতে হবে।
স্থানান্তর বা সরানোর আদেশ কোনও পক্ষকে কোনও এলাকায় থাকা সব মানুষ বা স্থানকে সামরিক লক্ষ্য হিসেবে গণ্য করার অনুমতি দেয় না; বরং এ ধরনের হামলায় সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যগুলোর মধ্যে পার্থক্য রাখা, ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করা বাধ্যতামূলক।
কিন্তু এই নীতিগুলো বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে, যার ফলে হাজার হাজার শিশু নিহত, আহত এবং তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি সেবাগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ইউনিসেফ তাদের কর্মীর ওপর হামলার তদন্তের এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে ইউনিসেফ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করতে এবং শিশু সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে প্রভাব খাটানোর আহ্বান জানাচ্ছে।