জুলাই বিপ্লবের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চলছে বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘আলোকচিত্রে জুলাই বিপ্লব ২৪’ শীর্ষক প্রদর্শনী গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শুরু হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলক চত্বরে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ২২০টি আলোকচিত্র, যেখানে ফুটে উঠেছে গণঅভ্যুত্থানের স্মরণীয় অগ্নিগর্ভ মুহূর্ত। শিক্ষার্থীরা দলে দলে এসে এ সব আলোকচিত্র দেখে আন্দোলনের গৌরবময় স্মৃতি স্মরণ করছেন। বিজয়ের মাসে এ আয়োজনকে সর্বজনের বিজয়ের প্রতীক হিসেবে দেখছেন তারা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে এ প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রদর্শনীর আলোকচিত্রে ‘ঐতিহাসিক ১৬ জুলাই’, ‘বিজয় উল্লাস’, ‘গণজোয়ার’, ‘নেকড়ের সন্ত্রাস’, ‘বিশ্বজিতের কণ্ঠস্বর’, ‘সংখ্যায় বেশি হলেও ভয় তাদেরই বেশি’, ‘ঠিক সন্ধ্যা নামার আগে হায়েনাদের হানা’ এবং ‘জুলাই বিপ্লবে ছাত্রলীগের পালানোর দৃশ্য’ এর মতো শিরোনামে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
প্রদর্শনীতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, “১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের প্রথম বিজয় ছিল। কিন্তু সেটা ফ্যাসিস্ট শাসনে কুক্ষিগত হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবের পর বিজয় দিবস সবার বিজয় হয়ে উঠেছে। প্রদর্শনী আমাদের দুইটি বিজয়কে একসঙ্গে দেখে নতুন দিশা দেবে এবং তরুণদের সাহসী করবে।”
এ আয়োজনকে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব। তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটা কিছুটা কমেছে। এমন আয়োজনের মাধ্যমে আবারো একত্রিত হয়ে রাষ্ট্র গঠনের কাজে অংশ নেওয়ার ঐক্য ও সমৃদ্ধি আসবে।”
আলোকচিত্র প্রদর্শন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “প্রদর্শনীর মাধ্যমে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান, আমাদের দ্বিতীয় বিজয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এ আয়োজন ছাত্র-জনতার সংগ্রাম ও ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত এ বিজয়কে স্মরণ করে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহস দিয়ে আমাদের ঐক্যকে শক্তিশালী করবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের স্বাধীনতার আসল রূপ পুনরুদ্ধার করেছে। প্রদর্শনীতে এসে আমরা বুঝতে পারব, গত ৫ আগস্টের আগে কত ভয়ংকর সময় পার করেছি এবং ছাত্র-জনতার সাহসিকতার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।”
আয়োজনের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ আয়োজনের উদ্দেশ্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব মনে করিয়ে দিয়ে ছাত্র-জনতার সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রেখে দেশ গড়ার প্রত্যায়কে আরও উদ্দীপিত করা। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই। তাই সারাবছর প্রদর্শনীর আয়োজন করা উচিত।”