গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। নিজের ফর্মও হারিয়ে ফেলেন এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে। ফলে তীব্র সমালোচনার মুখে নেতৃত্ব ছাড়ার কথা ভাবছিলেন। শেষমেষ টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব ছাড়লেও বাকি দুই ফরম্যাটের নেতৃত্বে আছেন তিনিই। বিপিএলের পর আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শান্ত অধিনায়ক হিসেবেই ফিরবেন, এমনটাই জানালেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
আফগানিস্তান সিরিজের সময় ইনজুরিতে ছিটকে যান শান্ত। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ খেলে। টি-টোয়েন্টি সিরিজ নেতৃত্ব দেন লিটন দাস। শান্ত বিসিবিকে জানিয়ে দেন টি-টোয়েন্টিতে তিনি নেতৃত্ব দেবেন না। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে নেতৃত্ব দিতে আপত্তি নেই। বোর্ড সভাপতি ফারুক জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত শান্তর নেতৃত্বেই খেলবে বাংলাদেশ দল!
এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেছেন, ‘শান্ত তো দলের বাইরে গেছে ইনজুরির জন্য। ও (শান্ত) যদি ফিরে আসে, অধিনায়ক হিসেবে ফিরে আসবে। ওর মেয়াদ কতদিন, আপনারা বলেছেন যে এই ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর। আমরা আসলে মনে করেছিলাম ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত অধিনায়ক থাকবে। এরপরের ব্যাপারটা বোর্ডের কাছ থেকে…। কিন্তু এই মুহূর্তে সে ইনজুরড হয়ে বাইরে গেছে, ও অধিনায়ক হিসেবেই আসবে। এখন আমরা ওর অধিনায়কত্ব না নেওয়ার কোনও কারণ দেখছি না।’
টি-টোয়েন্টিতে শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে ফারুক বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে শান্ত জানিয়েছে সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। প্রথম ওই ব্যাপারে আমরা আরেকজন অধিনায়ককে চিন্তা করেছি। যদিও টি-টোয়েন্টি এখনও বেশ দূরে আছে। আরও প্রায় ছয় মাস পর মনে হয়। এই মুহুর্তের ইস্যু না আর কী।’
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেওয়া লিটন আছেন ফর্মহীন। লম্বা সময় ধরে রানখরায় ভুগছেন তিনি। বিপিএলেও একই অবস্থা। তিন ম্যাচের একটিতেও বলার মতো রানের দেখা পাননি। লিটনের ফর্ম নিয়ে সাবেক অধিনায়ক ফারুক বলেছেন, ‘আমি সবসময় মনে করি যে ক্রিকেটিং ব্রেইন, মেধা, অধিনায়কত্বের সক্ষমতার সঙ্গে ফর্মের কোনও সম্পর্ক নাই। একটা মানুষ যদি দীর্ঘদিন ফর্মে না থাকে তাহলে এটা একটা ব্যাপার। একজন ব্যাটারের আউট অব ফর্ম হবে, এটা খুব স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। আপনি যদি দেখেন বিরাট কোহলিও রান করতে পারছে না, রোহিত শর্মাও যেরকম খেলোয়াড় রান করতে পারছে না। লিটনের সেরা পার্টটা ছিল এই ট্যুরে, যেটা চিন্তা করেছিলাম আমি বা আমার বোর্ডের, ওদের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম; আমি মনে করেছিলাম অনেক সময় প্লেয়ারকে দুইভাবে সাহায্য করা যায়।’
ফারুকের কথাতেই বোঝা গেলো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নেতৃত্ব পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন লিটনই, ‘যেহেতু রান করছে না ওয়ানডেতে, যদি ওকে অধিনায়কত্ব দেই, বাড়তি (দায়িত্বে) ফর্মে ফিরে আসতে পারে। ফর্মে ফিরে না আসলেও সে খুব ভালো অধিনায়কত্ব করেছে। এটা একটা বিরাট গুণ, অধিনায়কের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যদি অ্যাফেক্ট না করে। আমি আশা করি ও ফর্মে ফিরবে খুব শিগগিরই। তারপর আমরা যখন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের ব্যাপারে আলোচনা হবে, সে নিশ্চয়ই এগিয়ে থাকবে অধিনায়ক হিসেবে।’