চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলায় লোকালয় থেকে হাতি সরাতে লিগ্যাল নোটিশ (আইনি নোটিশ) দিয়েছেন চট্টগ্রামের এক আইনজীবী। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, ষোলশহর এবং চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে ডাক যোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী মো. নাজিম উদ্দিন।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পক্ষ থেকে নোটিশটি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মো. নাজিম উদ্দিন।
নোটিশে বলা হয়, গত ২০১০ সালে বন্যহাতির পাল বাঁশখালী উপজেলার পাহাড়ি অভয়ারণ্য থেকে কেইপিজেড এলাকায় প্রবেশ করে। ওইসময় থেকে বন্যহাতি দিনের বেলায় কেইপিজেডে বনাঞ্চলে বসবাস করলেও রাতের বেলায় খাবারের খোঁজে আশপাশের বড়উঠান ইউনিয়ন, বৈরাগ ইউনিয়ন ও বারশত ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে লোকালয়ে প্রবেশ করে ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়। এতে প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে। হাতিগুলো ধ্বংস করছে বাড়িঘর। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে বন্যহাতির পালের অধিকাংশ হাতি কেইপিজেড এলাকার বনাঞ্চল ত্যাগ করলেও ২টি হাতি কেইপিজেড এলাকায় থেকে যায়। সেখানে আজ অবধি বসবাস করছে হাতি দুটি। ওই দুই হাতির তাণ্ডবে পাহাড়ের আশ-পাশের দুই উপজেলার বাসিন্দারা এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কেইপিজেড এলাকার বনাঞ্চলে অবস্থান করা বন্যহাতি কর্ণফুলীর বড় উঠান, আনোয়ারার বৈরাগ ও বারশত ইউনিয়নের বিভিন্ন লোকালয়ে এবং আশ-পাশের গ্রামে হামলার ঘটনায় অন্তত ৩০-৩৫ জন স্থানীয় বাসিন্দার প্রাণহানি, ১৫০-২০০ জন স্থানীয় বাসিন্দা গুরুতর আহত, প্রায় ৫০০ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে। পাশাপাশি কর্ণফুলী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামেও একাধিকবার বন্যহাতির তাণ্ডবে ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধনের ঘটনা ঘটে। চলতি মাসে বন্য হাতির হামলায় তিনজন বাসিন্দার প্রাণহানি ঘটে।
এতে আরও বলা হয়, ইতিপূর্বে উক্ত বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, বন বিভাগ, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে বন্যহাতি অপসারণ করার জন্য একাধিক লিখিত অভিযোগ, মানববন্ধন কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করে। এতেও কোনও ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত হয়নি।
তাই বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৮(১)(ক) বিধান মতে অত্র আইনানুগ নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে কেইপিজেড এলাকার বন্যহাতি অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়।