Homeদেশের গণমাধ্যমেগাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার পর নতুন করে আলোচনার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়ে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফিলিস্তিনের এক শীর্ষ আলোচক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ আলোচনা এখন ‘নীতি-নির্ধারণী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসর মধ্যস্থতার মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছে, যেখানে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি পক্ষ যুদ্ধবিরতি তিনটি-পর্যায়ের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। প্রথম ধাপে, ৪৫ দিনের মধ্যে জিম্মি বেসামরিক নাগরিক এবং নারী সেনাদের মুক্তি দেওয়া হবে যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের কেন্দ্র, উপকূলীয় সড়ক এবং মিসরের সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে সরে আসবে।

দ্বিতীয় ধাপে, বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা উপত্যকা ইসরায়েলি বাহিনী পুরো প্রত্যাহার করা হবে। তৃতীয় ধাপে, যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হবে।

ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, হামাস কর্তৃক আটক ৯৬ ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে ৬২ জন জীবিত রয়েছেন। এরই মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির এই পরিকল্পনাটি ৩১ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে তৈরি বলে মনে হচ্ছে, তবে সব পক্ষই বলছে যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো সমাধান করা বাকি। সেসময় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি অক্টোবরের মাঝামাঝি আলোচনায় কোনো চুক্তি হয়নি, কারণ হামাস একটি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।

যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত পর্যায় নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেছেন, আমরা কখনো এতটা কাছাকাছি পৌঁছিনি।

তবে তিনি ‘এক্স’ (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, গাজার বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। গাজায় হামাসের সামরিক এবং প্রশাসনিক শক্তি পরাজিত করার পর ইসরায়েল গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং পূর্ণ স্বাধীনতার সঙ্গে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৭ অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫৩ জন জিম্মি হন। এরপর থেকে চলমান সংঘর্ষে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘ এবং অন্য সংস্থাগুলো এ পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য মনে করে। গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে এবং সেখানে খাদ্য সংকট ও মানবিক সহায়তার অভাবে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার হয়েছে। তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সম্পন্ন হওয়া উচিত, অন্যথায় এর পরিণতি ভালো হবে না।

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার ফলাফল এখন নির্ভর করছে উভয় পক্ষের সদিচ্ছা এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর দক্ষতায়। পরিস্থিতি জটিল হলেও আলোচনার এই অগ্রগতি আশার আলো দেখাচ্ছে যে, একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত