বাজার নিয়ন্ত্রণ ও পণ্যমূল্য সাধারণের ক্রয়সীমায় আনতে খুলনায় ওএমএসে কৃষিপণ্য বিক্রিতে জনপ্রতি পাঁচটি পণ্যের প্যাকেজ মূল্য ৩২০ টাকা। আর পাইকারি বাজার থেকে এ পাঁচটি পণ্যের ক্রয় মূল্য ছিল ২৯ অক্টোবর ৪৮৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং ২৮ অক্টোবর ৪৮৫ টাকা ৪০ পয়সা। এ হিসাবে জনপ্রতি ১৬৫ টাকা ৯০ পয়সা ভর্তূকি দেওয়া হচ্ছে। আর ট্রাকপ্রতি দৈনিক পণ্যমূল্যের ওপর ভর্তূকি যাচ্ছে ৩৩ হাজার টাকা।
দৈনিক পাঁচটি ট্রাকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ভর্তূকি দিতে হচ্ছে। আর গত দুদিনের ট্রাক সেলে পণ্যমূল্যের ওপর ভর্তূকির পরিমাণ ৩ লাখ ৩০ টাকা। এর পাশাপাশি গত দুদিনে আনুষঙ্গিক খরচ আরও ১ লাখ টাকা। যা ট্রাক ভাড়া ও দায়িত্বে নিয়োজিতদের খাবার ও নাস্তার জন্য ব্যয়। এ খাতে দৈনিক ট্রাক প্রতি খরচ ১০ হাজার টাকা। ট্রাক প্রতি তিন জন কর্মকর্তা, দুজন আনসার ও দুজন শ্রমিক দায়িত্ব পালন করেন।
খুলনা কৃষি বিপণন বিভাগের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা (ইনচার্জ) আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, ‘পণ্য কিনে তা জনগণের মাঝে বিক্রি করে প্রতিটি ট্রাকে প্রায় ৩৩ হাজার টাকা ভর্তূকি দিচ্ছে সরকার। উদ্দেশ্য পণ্যমূল্য সহনীয় করা ও সাধারণের ক্রয়সীমার মধ্যে আনা। ভর্তুকি আরও বাড়তে পারে। আর ট্রাকের ভাড়াও বাড়বে থেকে। ফলে আনুষঙ্গিক খরচও বাড়বে। একটা উদ্যোগকে সফল করতে আনুষঙ্গিক খরচ থাকলেও তদারকিতে থাকা কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক কোনও বরাদ্দ নেই। কর্মকর্তারা সকাল ৭টা থেকে রাত ১০ টা ১১টা পর্যন্ত শ্রম দিচ্ছেন স্বেচ্ছাশ্রমের আদলে।’
কৃষি বিপণন অধিদফতর খুলনা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর উদ্বোধনী দিনে পোটল ৪২ টাকা কেজি, পেঁপে ২৭ টাকা কেজি, আলু ৫৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ১০৫ টাকা কেজি এবং ডিম প্রতিটি সাড়ে ১২ টাকা হিসেবে পাইকারি কেনা হয়। ওএমএসে আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে ৩ কেজি ৯০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজ প্রতি কজি ৭০ টাকা কেজি দরে, ডিম প্রতিটি ৯ টাকা ১০ পয়সা হিসেবে এক ডজন ১৩০ টাকা দরে এক ডজন, কাঁচা পেপে প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে এক কেজি ৩০০ গ্রাম মিলিয়ে ২০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৩০ দরে এক কেজি করে দেওয়া হয়। পাঁচটি পণ্য নিয়ে প্যাকেজ দাম ৩২০ টাকা।
২৯ অক্টোবর পেঁপের বদলে লাউসহ ৫টি পণ্য দেওয়া হয়। লাউ প্রতিটি সাড়ে ২৭ টাকায় কিনে জনগণের মধ্যে ২০ টাকায় দেওয়া হয়। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক খরচ হিসেবে প্রতিটি ট্রাক ভাড়া বাবদ ৪ হাজার ২৮০ টাকা, আর প্রতি ট্রাকে থাকা জনবলের খাবার বাবদ বরাদ্দ ৫ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়াও পয়েন্টে যাতায়াতের জন্য ট্রাকপ্রতি আরও ৩০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম বলেন, পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্তরা গভীর সংকটে রয়েছেন। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই ভর্তূকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এ পরিকল্পনা। সরকারের ভর্তূকি গেলেও বাজার ইতোমধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। সুফল পেতে বেশি সময় লাগবে না। ৩০ অক্টোবর থেকে কিছু পণ্যের ক্রয় মূল্য বাড়লেও জনগণের মাঝে বিক্রির সময় প্যাকেজ মূল্য অপরিবর্তিত থাকবে।
উল্লেখ, কৃষি বিপণন বিভাগের আওতায় খুলনা মহানগরীর ৫টি পয়েন্ট হলো বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, শিববাড়ি মোড়, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মোড় ও খালিপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের সামনে।