শুরুতে ব্যাটিং ধস, এরপর মাহমুদউল্লাহ-রিশাদের ব্যাটে চড়ে ১৬৭ রানের সাদামাটা সংগ্রহ ফরচুন বরিশালের। মামুলি লক্ষ্য দিয়ে চাপেই ছিল তামিমরা। শেষ ওভারে খুলনা টাইগার্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৫ রানের। আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই লক্ষ্যটা তেমন কঠিন কিছু নয়। নাঈম শেখ সেই লক্ষ্যেই ব্যাটিং করছিলেন। প্রথম তিন বলে দুই ছক্কায় ব্যবধানও কমিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু চতুর্থ বলে আউট হতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয় ফেলে খুলনা। বরিশাল জিতে যায় ৭ রানে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ১৬৭ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বরিশাল। জবাবে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ইমরুল কায়েসকে (০) হারায় খুলনা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম শেখ মিলে ৫৯ রানের জুটি গড়েন। অধিনায়ক মিরাজ ৩৩ রানে আউট হতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। পরে অবশ্য আফিফ হোসেন ১৭ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা প্রভাব রাখেন। এদিকে ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করতে থাকেন নাঈম। শেষ ওভার পর্যন্ত নাঈম যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন মনে হচ্ছিল খুলনাই বুঝি জিতে যাবে। বিশতম ওভারের চতুর্থ বলে তিনি আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রানে থামে খুলনার ইনিংস। ৫৯ বলে ৪ চার ও ৬ ছক্কায় ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম।
বরিশালের বোলারদের মধ্যে জাহানদাদ খান সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া মোহাম্মদ নবী, রিপন মন্ডল ও রিশাদ হোসেন একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় বরিশাল। ব্যাটিংয়ে নেমে মিরাজের প্রথম ওভারেই পরপর দুই ওপেনারকে হারায় তারা। তামিম ও ডেভিড মালান দুজনই গোল্ডেন ডাক মারেন। মুশফিকুর রহিমও (৫) দ্রুত বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় বরিশাল। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর পর তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ মিলে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। ৪৭ রানের জুটির পর হৃদয় ফেরেন সাজঘরে। ৩০ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় তিনি খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস।
হৃদয়ের বিদায়ের পর মোহাম্মদ নবী (১) ও ফাহিম আশরাফ (৯) দ্রুত আউট হলে ফের চাপে পড়ে বরিশাল। এরপর রিশাদ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ গড়েন গুরুত্বপূর্ণ ৪৭ রানের জুটি। এই জুটিই মূলত বরিশালের স্কোরকে ১৬৭ রানে নিয়ে যায়। মাহমুদউল্লাহ ৪৫ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। অন্যদিকে রিশাদ খেলেন ১৯ বলে ৩৯ রানের ক্যামিও ইনিংস। যাতে ৫টি চার ছাড়াও ছিল একটি ছক্কার মার।
খুলনার বোলারদের মধ্যে মিরাজ সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন। সালমান ইরশাদ নেন দুটি উইকেট।
হৃদয় দলের ৬৩ রানে ফিরে যান। ১ রান যোগ করেই আউট হন নবী। ৮৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে অলআউটের শঙ্কায় পড়ে বরিশাল। মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ সেখান থেকে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। রিয়াদ খেলেন ৪৫ বলে ৫০ রানের কার্যকরী ইনিংস। তিনি তিনটি চার ও দুটি ছক্কা মারেন। রিশাদ ১৯ বলে ৩৯ রান যোগ করেন। পাঁচ চারের সঙ্গে একটি ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। শেষে জাহানদাদ ৫ বলে ১০ ও তানভীর ৪ বলে ১২ রান করেন।
বরিশালের ইনিংসে শুরুতে ধাক্কা দেওয়া মিরাজ শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। সালমান ইরশাদ ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নেন।
৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বরিশাল। সমান খেলে চার পয়েন্টে এগিয়ে থেকে শীর্ষে রংপুর রাইডার্স (১৬)।