আনোয়ার সাদাত ১৯৭৭ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলে যান। সেটাই ছিল কোনো আরব নেতার প্রথম ইসরায়েল সফর। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের কয়েক বছরের মাথায় তাঁর এ সফরকে আরব নেতারা ভালোভাবে নেননি। তবে বিরোধিতা উপেক্ষা করেই জেরুজালেম সফর করেন সাদাত।
পরের বছর ১৯৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিড সফর করেন সাদাত। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন ও তাঁর দলবলের সঙ্গে সাদাতের ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
তবে আলোচনা চলার সময় বেগিন সিনাই উপত্যকা থেকে ইহুতি বসতি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হন সাদাত। তিনি আলোচনা থেকে সরে আসার হুমকি দেন। এমন অবস্থায় জিমি কার্টার তাঁকে থামান। কার্টার তাঁকে বলেন, ‘আপনি আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আলোচনা চালিয়ে যেতে চাইব, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি ক্যাম্প ডেভিডে থাকবেন। আমি এটাকে আমাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব এবং মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর গুরুতর আঘাত বলে মনে করব।’
অবশেষে আলোচনার মধ্য দিয়ে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। তবে এর জন্য ফিলিস্তিনিদের চরম মূল্য দিতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়, ইসরায়েল মিসরকে সিনাই উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেবে। আর বিনিময়ে মিসর ইহুদি রাষ্ট্রটিকে পূর্ণ স্বীকৃতি দেবে ও পুরোপুরি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এ ছাড়া সুয়েজ খাল দিয়ে মুক্তভাবে ইসরায়েলি জাহাজ চলাচলের সুযোগ দেবে মিসর।
ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ১৯৪৮ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে চলা যুদ্ধাবস্থার অবসান হয়।
ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনা প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৮ সালে আনোয়ার সাদাতকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনও শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন।