Homeদেশের গণমাধ্যমেকতটা প্রভাব ফেললেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

কতটা প্রভাব ফেললেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো


কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। ২০১৫ সালে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর থেকে প্রগতিশীল ও উদার নীতির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছিল তাকে। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। শাসনকালের শেষদিকে তাকে ও তার সরকারের কার্যক্রমকে ঘিরে জনগণের মনোভাব পরিবর্তন হতে শুরু করে।

পদত্যাগ

৯ বছর কানাডার নেতৃত্ব দেওয়ার পর সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো নিজের দল লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন। নতুন নেতা নির্বাচনের তারিখ দলীয়ভাবে নির্ধারিত হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রুডোর জনপ্রিয়তার পতন ও পদত্যাগের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব রয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসছেন ট্রাম্প। তার আগেই কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কঠিন হতে শুরু করেছে। এর আগেও ট্রাম্পের মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ভালো যায়নি।

উত্তরাধিকার

জাস্টিন ট্রুডো কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে। তার বাবা পিয়েরে কানাডায় ১৫ বছর শাসন করেছিলেন। তার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি কানাডিয়ান রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু ১৯৮৪ সালে তার বাবা তার ক্যারিশমা ও জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় পদত্যাগ করেছিলেন। জাস্টিন ট্রুডো এই ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার গ্রহণ করেন। কিন্তু তার রাজনৈতিক জীবনেও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আসে।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর

জাস্টিন ট্রুডো ২০১৫ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে কানাডিয়ানদের জন্য এক আশার সূচনা ঘটে। তার ক্যাম্পেইনের মূল স্লোগান ছিল ‘সানি ওয়েজ’ বা ‘উজ্জ্বল পথ’। তিনি কানাডাকে একটি সমতাভিত্তিক ও বহুসংস্কৃতিবাদী সমাজে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এখনকার কানাডা যতটা বহুসংস্কৃতিবাদী ও আন্তর্জাতিকতাবাদী দেশ হিসেবে পরিচিত, এর অনেকটাই কৃতিত্ব জাস্টিন ট্রুডোর। তার নেতৃত্বে কানাডা বহুসংস্কৃতির চর্চা করেছে। দেশটিতে ফরাসি ও ইংরেজি ভাষা গুরুত্ব পেয়েছে।

চ্যালেঞ্জ

শুরুতে কানাডার জনগণের মধ্যে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা ছিল অনেক বেশি। তবে কিছু সময় পরেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। কানাডার জনগণ বিশেষভাবে জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি ও বাসস্থানের সংকটের জন্য তাকে দায়ী করতে শুরু করেন।

এ ছাড়া, তার শিথিল অভিবাসন নীতির কারণে দেশটিতে জনসংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। এতে কিছুটা অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত, বাসস্থানের সংকট ও জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল। এর পাশাপাশি, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে তার সরকারের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে অসন্তোষ দেখা দেয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি এবং তার ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা (স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি) তার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ট্রুডোর কাজের প্রভাব

জাস্টিন ট্রুডোর শাসনকালের শেষে জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও তার কাজগুলো কানাডার সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তিনি যে নীতির প্রতি আস্থাশীল ছিলেন, তা কানাডার জনগণের মধ্যে সমানাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও বহুসংস্কৃতির প্রতি মনোভাব গড়েছে। ট্রুডোর নেতৃত্বে কানাডার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বেশি পরিচিত হয়েছে। পাশাপাশি দেশটির বৈশ্বিক প্রভাবও বেড়েছে। তার নেতৃত্ব শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং কানাডার জাতিগত ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির একটি বড় অধ্যায় হিসেবেও দেখা হচ্ছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত