রাজধানীর ধানমন্ডি সীমান্ত স্কয়ারের নিচতলায় ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স নামের স্বর্ণের দোকানে দিন-দুপুরে চুরির ঘটনায় কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। মার্কেটের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে। মার্কেটের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ জানতে পারে, বড় একটি গ্রুপ দোকানের তালা কাটার পরে গ্লাস খুলে স্বর্ণ চুরি করেছে। এ সময় এদের দুইজন বাদে বাকিদের মুখে মাস্ক ছিল। তবে কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এমন নিরাপত্তা বেষ্টিত মার্কেটটিতে এক শাটারের তালা কাটার পরে গ্লাস খুলে দিন-দুপুরে কীভাবে চোরেরা হানা দিলো— তা নিয়ে চলছে সেখানকার দোকানিদের মধ্যে নানান আলোচনা। তারা বলছেন, এমন কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও মার্কেটে এমন ঘটনা তাদের চিন্তার বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মার্কেটটিতে মোট ৭০ জন নিরাপত্তা প্রহরী সারাক্ষণ নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকেন। ঘটনার সময় বাইরে কেউ কেউ দায়িত্বরত ছিলেন। এছাড়া অনেকে নামাজে চলে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ঠিক এ সময় এমন ঘটনা ঘটে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকালে ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় আমরা কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি। তিনি বলেন, তদন্তে স্বার্থে আমরা এখন কিছুই প্রকাশ করছি না। গ্রুপটি বাহির থেকে মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করেছে। মোটামুটি তারা একটি বড় গ্রুপ ছিল।
সরেজমিন গেলে দেখা যায়, পুরো মার্কেটের প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথ একটি। মার্কেট ঘিরে চারপাশে উঁচু প্রাচীরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে প্রবেশ কিংবা বের হতে হয়। চুরি হওয়া ওই দোকানের সামনে গেলে দেখা যায়, দোকানটি ঘিরে রেখেছেন লোকজন। দোকানটিতে চুরি হওয়ার রহস্য উদঘাটনে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করছেন সেখানে উপস্থিত তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
দোকানটির মালিক কাজী ডলি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার দোকানের সব স্বর্ণ নিয়ে গেছে। তার ধারণা, ৩০০ থেকে ৩৫০ ভরি স্বর্ণ চোরে নিয়ে গেছে। এছাড়াও ডায়মন্ডের পাঁচটি সেট নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমাদের কোনও সন্দেহ নেই। চোর চুরি করেছে। পুরো ব্যাপারটা এখন প্রশাসনের ওপর নির্ভর করছে।
দোকানের একজন কর্মচারী জানান, সেসহ দোকানটির আরও দুইজন কর্মচারী জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলেন। নামাজ আদায় করে নিচে নেমে দেখেন দোকানের শাটারের তালা খোলা। ভেতরে ঢুকে সব কিছু এলোমেলো দেখতে পান। পরে সংশ্লিষ্টদের খবর দেন।
চুরি হওয়ার সময় আশপাশের দোকান খোলা থাকলেও এ সময় কেউ চোরের অবস্থান টের পাননি।
পাশের প্রসাধনী দোকানের দুইজন কর্মচারী জাকিয়া ও মুন্নি জানান, চুরি হওয়ার সময় তাদের দোকানের সামনে কয়েকজনের সন্দেহজনকভাবে পায়চারি করতেছিল। এ সময় কয়েকজন ক্রেতা তাদের দোকানে প্রবেশ করেন। সেসময় চুরির ঘটনা ঘটে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) জুমার নামাজের সময় দুপুর ১টার পর দোকানটিতে এই চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির খবর পাওয়ার পরপরই ধানমন্ডি থানার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেখানে ছুটে যান। তবে কী পরিমাণ স্বর্ণ চুরি হয়েছে— পুলিশের পক্ষ থেকে তা এখনও নিশ্চিত করেনি।