বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম দাবানলে পুড়ছে দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার (২৬ মার্চ) স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একাধিক স্থানে ছড়িয়ে পড়া আগুনে অন্তত ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উইসেওং কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়া আগুনে ১৪ জন এবং সানচেওং কাউন্টির আগুনে বাকি চারজন মারা গেছেন।
মৃতরা সবাই ষাট ও সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তি ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকর্তা।
লোকালয়ের কাছাকাছি আগুন প্রাণঘাতি রূপ নেওয়ায় অন্তত ২৭ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি দাবানল আক্রান্ত এলাকার নিকটবর্তী কারাগার থেকে বন্দিদেরও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু বলেছেন, দাবানলের নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সব সদস্য মাঠে রয়েছেন। এমনকি, দেশে অবস্থানরত মার্কিন সেনারাও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন। তবে পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে নয়।
দেশটির পাহাড়ি ভূ-প্রকৃতির কারণে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বেশি। কোরিয়া বন পরিষেবার মুখপাত্র কিম জোং গান জানিয়েছেন, চার হাজার ৯১৯ জন দমকলকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে। সহায়তা করার জন্য তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা ও সেনা সদস্য। দাবনল নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার হচ্ছে।
বনাঞ্চলীয় দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ লী বুইওং ডো বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী দাবানলসহ অন্যান্য দুর্যোগের সংখ্যা ও মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে, জানুয়ারিতে লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জাপানে দাবানলের ঘটনা তুলে ধরেন তিনি।
এদিকে, দাবানলের শিকার এলাকায় বুধবার পুরো দিনই শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়।