জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, উত্তর গাজায় মানবিক সহায়তা যেমন: খাবার, ওষুধ ও গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ পৌঁছাতে বাধা দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সোমবার (২১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে গাজার প্রত্যেক মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছানো দরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ ধরে আক্রমণ জোরদার করছে। ফলে সেখানে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে তারা। হামাস সেখানে পুনরায় সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে সেখানকার বাসিন্দা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতাল এবং বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থলগুলো ঘিরে ফেলেছে।
উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসকরা রয়টার্সকে জানান, ইসরায়েলি সেনারা একটি স্কুলে হামলা চালায় এবং পুরুষদের আটক করার পর ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ফিলিপ লাজারিনি বলেন, হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত ও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। আহতরা সেবা পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ইউএনআরডব্লিউএ-এর বাকি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এতটাই ভিড় যে বাস্তুচ্যুত মানুষ টয়লেটে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। যারা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, তাদেরকে হত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
লাজারিনি আরও বলেন, খবরে বলা হয়েছে, পালানোর চেষ্টা করা লোকজনকে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের লাশ রাস্তায় ফেলে রাখা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মানুষকে উদ্ধার অভিযানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, অক্টোবরের প্রথম দুই সপ্তাহে যখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জাবালিয়ার আশেপাশে আক্রমণ শুরু করেছিল-তখন থেকেই উত্তর গাজায় কোনও ত্রাণ ঢুকতে দেয়া হয়নি। সোমবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, তারা জাবালিয়ার ফালুজা এলাকায় প্রবেশের অনুমতি চাইছে চার দিন ধরে। কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
জাবালিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের প্রধান নার্স হাদিল ওবেইদ বলেছেন, তাদের পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চতুর্থ দিনের মতো কোনও খাবার নেই।
তিনি আরও বলেছেন, এমনকি হাসপাতালের জেনারেটর চালানোর জন্যও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অনুমতির প্রয়োজন হয়।
শুধু মানবিক সহায়তা সরবরাহ নয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোকেও গাজায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। ফলে সেখানকার প্রকৃত চিত্র জানতে পারছে না বিশ্ববাসী।