ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার নির্ধারিত মন্ত্রিসভার বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে ‘শেষ মুহূর্তে সংকট তৈরির’ অভিযোগ তুলেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চুক্তি অনুমোদনের কথা ছিল। তবে নেতানিয়াহুর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যস্থতাকারী ও ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া চুক্তির কিছু শর্ত মেনে নিতে হামাস অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং শেষ মুহূর্তে নতুন দাবি তুলছে। যতক্ষণ না মধ্যস্থতাকারীরা নিশ্চিত করছেন যে হামাস চুক্তির সব শর্ত মেনে নিয়েছে, ততক্ষণ মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে না।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা ইযাত আল-রিশেক এক বিবৃতিতে জানান, দলটি বুধবার ঘোষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে, ইসরায়েলি সেনাদের পরিবার ও তাদের সমর্থকরা নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করে বলেন, এটি আত্মসমর্পণ ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলবে।
ইসরায়েলের এক সেনার বাবা ইহোশুয়া শানি বলেন, এই চুক্তি মানে আত্মসমর্পণ। প্রধানমন্ত্রীকে বলুন এই চুক্তি সই না করতে।
এদিকে, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পরও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা চালাচ্ছে। গাজা সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার থেকে শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ শিশু ও ২৪ নারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২০০ জন।
গাজা সিটির আল-জাইতুন এলাকায় একটি স্কুলে বোমা হামলায় দুজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানায় সিভিল ডিফেন্স।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে গাজায় অন্তত ৪৬ হাজার ৭০৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন আহত হয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদক হামদাহ সালহুত বলেছেন, হামাস চুক্তি থেকে সরে আসার কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং নেতানিয়াহুর সরকারে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পরিস্থিতি জটিল করেছে।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মট্রিচের দল রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টি এ চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়ে বলেছে, চুক্তি ইসরায়েলের জন্য ক্ষতিকর। দলটি যুদ্ধবিরতির পর পূর্ণমাত্রার লড়াইয়ের নিশ্চয়তা দাবি করেছে।
নেতানিয়াহুর চরম ডানপন্থি জোট চুক্তি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। সরকার অতিরিক্ত ছাড় দিলে জোট ভেঙে যেতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন নেতানিয়াহুর মিত্ররা।