বাশার আল-আসাদের দীর্ঘ শাসনের অবসানের পর প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট সিরিয়ার দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এই ফ্লাইটটি দেশের উত্তরের আলেপ্পোতে অবতরণ করে। ফ্লাইটটিতে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে সাংবাদিকদের একটি দলও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
৮ ডিসেম্বর দামেস্ক বিমানবন্দরে আসাদপন্থি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর থেকে কোনও ফ্লাইট ওঠা-নামা করেনি। ওইদিন বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানীর দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় আসাদবাহিনী বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এ সপ্তাহের শুরুতে বিমানবন্দরের কর্মীরা বিমানগুলোতে বিদ্রোহীদের তিন তারকা পতাকা অঙ্কন করে। ২০১১ সালের বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে এই পতাকাটি এখন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছে। টার্মিনালের অভ্যন্তরেও আসাদের সরকারের পুরোনো পতাকার জায়গায় নতুন পতাকা স্থান নিয়েছে।
এক বিমানবন্দর কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষে আগামী ২৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় শুরু হবে।
এদিকে, সিরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য পুনরায় শুরু করতে জর্ডান কারাঞ্জা সীমান্ত পারাপার পুনরায় চালু করেছে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়া এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
নতুন শাসক গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দেশটির অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। একসময় আল-কায়েদার শাখা হিসেবে পরিচিত এইচটিএস তাদের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন দামেস্কে এইচটিএস নেতা আহমদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি সিরিয়ার জন্য নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জরুরি মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
পেডারসেন জানান, এখন একটি নতুন সিরিয়া দেখার আশার সূচনা হয়েছে।
এইচটিএসের সামরিক প্রধান মুরহাফ আবু কাসরা বলেছেন, কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো নতুন নেতৃত্বের অধীনে একীভূত হবে। তবে ফেডারালিজম মেনে নেওয়া হবে না।
এদিকে, সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশনের প্রধান হাদি আল-বাহরা বলেছেন, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার হতে হবে বিশ্বাসযোগ্য, কোনও সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে নয়।