বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই আর্থিক সাক্ষরতার ব্যবধান বাংলাদেশের অগ্রগতিতেও একটি বড় বাধা।
এখানে প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ এখনো ব্যাংকিং সেবা, ব্যাংকিং প্রোডাক্ট বা সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা সম্পর্কে পরিচিত নন।
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ৪৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ নারী আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবা গ্রহণ করছেন, যেখানে ৬২ দশমিক ৮৬ শতাংশ পুরুষ আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
ব্যক্তিজীবনে আর্থিক সাক্ষরতার গুরুত্ব অনুধাবন করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আর্থিক শিক্ষা ও সচেতনতা কর্মসূচি চালু করে, যা পরবর্তীকালে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
একই বছর যুক্তরাষ্ট্রে ‘আর্থিক সাক্ষরতা ও শিক্ষা কমিশন’(এফএলইসি) গঠন করা হয় যা অর্থ ব্যবস্থাপনার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রচারের জন্য কাজ শুরু করে। তখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও স্কুল পর্যায়ে আর্থিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়।
একইভাবে ভারতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ২০১৩ সালে আর্থিক সাক্ষরতা কেন্দ্র স্থাপন করে।
যদিও ২০০৫ সালে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের মঙ্গলম গ্রামের সব পরিবারকে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সাক্ষরতার একটি উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়।
তারপরও ভারতের ক্ষেত্রে, সাধারণ সাক্ষরতার হার ৭৭ শতাংশ, কিন্তু আর্থিক সাক্ষরতার হার ৩৫ শতাংশ।
এ ছাড়া জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০–এর মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে স্থান পেয়েছে।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করছে যা আর্থিক সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তবে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসেবে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছে, যার মধ্যে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম, লিড ব্যাংক পদ্ধতিতে জেলা পর্যায়ে স্টুডেন্ট ব্যাংকিং কনফারেন্সের আয়োজন করা, ন্যানো লোন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অন্যতম।