যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স অঙ্গরাজ্যে বর্ষবরণের সময় ১৪ জনকে হত্যাকারী সাবেক মার্কিন সেনা শামসুদ দীন জব্বার ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেছিলেন। হামলার পূর্বে ধারণকৃত ভিডিওতে আইএস এর প্রতি আনুগত্য স্বীকারের পাশাপাশি গান, মাদক ও মদের প্রতি নিজের ঘৃণার কথাও জানিয়েছেন তিনি। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
৪২ বছর বয়সী টেক্সাসের বাসিন্দা জব্বার একসময় যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আফগানিস্তান এ যুদ্ধ করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে হামলায় জব্বারের সঙ্গে আরও সহযোগী থাকতে পারে বলে ধারণা করলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বৃহস্পতিবার ( ২ জানুয়ারি) দাবি করেছে, ওই হামলা জব্বার একাই করেছিলেন।
হামলার পর পুলিশের গুলিতে নিহত হন জব্বার। গোলাগুলিতেও অনেকে আহত হয়েছেন। এফবিআই পুরো ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিআই এর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার রাইয়া বলেছেন, আইএসের প্রতি আনুগত্য স্বরূপই এই হামলা চালিয়েছেন জব্বার। পুরো বিষয়টি ছিল পরিকল্পিত।
সেনাবাহিনীর একজন সাবেক সদস্য, রিয়েল স্টেট এজেন্ট ও ট্যাক্স বিষয়ে পরামর্শদানকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ডেলোইট্টেতে চাকরি করা একজন মার্কিন নাগরিক কীভাবে আইএস এর প্রতি এত তীব্রভাবে অনুগত হয়ে গেল, তা এখনও বুঝে উঠতে পারেনি গোয়েন্দারা। জব্বার কীভাবে চরমপন্থিদের দলে ভিড়লেন, তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন রাইয়া।
হামলায় ব্যবহৃত ট্রাকের পেছনে আইএসের একটি পতাকা আটকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর সামরিক অভিযানে আইএস দুর্বল হয়ে পড়লেও অনলাইনে সদস্য সংগ্রহ চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।
শামসুদ দীন জব্বারের সৎভাই আব্দুর রহিম জব্বার জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে শামসুদ দীনের। এরপর থেকেই হতাশাগ্রস্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু হামলার কয়েক সপ্তাহ আগেও ভয়াবহ ধরনের কোনও রাগ বা অসন্তোষের লক্ষণ দেখা যায়নি তারমধ্যে।
টেক্সাসের বিমাউন্ট শহরে নিজ বাড়িতে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তার ভাই একজন স্মার্ট, হাসিখুশি, ক্যারিশমাটিক, ভদ্র একজন মানুষ ছিলেন। অকারণে একটি মাছি মারাও তার পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু ভয়াবহ হামলার সঙ্গে তার ব্যক্তিত্ব মেলানো যাচ্ছে না। সেজন্যই বিষয়টি আরও পীড়াদায়ক।