বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর পর জিডিপির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরলো অন্তর্বর্তী সরকার। এতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিগত যেকোনও সময়ের চেয়ে কমে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভঙ্গুর দশাকে ইঙ্গিত করছে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনাকালীন লকডাউনের সময়কাল বাদ দিলে আশির দশকের পর এটিই সবচেয়ে ধীর প্রবৃদ্ধি। মহামারি করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে প্রবৃদ্ধি আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমে ০ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমেছিল।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালীন ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। যদিও এক বছরের বেশি সময় ধরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দাবি ছিল— ওই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ছিল শুধু ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে
অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ছিল কেবল ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে। ওই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল মাইনাস ১ দশমিক ৬ শতাংশ। স্বাধীনতার পর থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা মোটামুটি লক্ষ করা গেলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জিডিপির প্রবৃদ্ধির তথ্য নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়। প্রায় প্রতিবছরই বাজেট ঘোষণার আগে ও পরে অর্থনীতিবিদরা জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছিলেন।
বিগত সময়ে জিডিপির তথ্য স্ফীত করে দেখানো হতো
এদিকে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের কারণেও অর্থনীতিতে অনেকটা অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। আন্দোলন ঘিরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিস্থিতিতে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মোট দেশজ উৎপাদনে বড় প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বন্যা ও শ্রমিক অসন্তোষের মতো নানাবিধ চ্যালেঞ্জও ছিল। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হতে থাকে। ডলার সংকটে আমদানি ব্যাহত হয়। বেশ কয়েক দিন ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ধীরে ধীরে সব কিছু চালু হলেও প্রথম কয়েক মাস অর্থনীতিতে অচলাবস্থা চলতে থাকে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত গার্মেন্ট খাতে অস্থিরতা বিরাজ করে। এখনও কিছু কিছু ব্যাংক গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর— এই তিন মাস অর্থনীতিতে অচলাবস্থা তো ছিলই, এর সঙ্গে আগের সরকারের আমলের স্ফীত করে দেখানো তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হয়েছে । ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তথ্যের সঙ্গে তুলনা করার ফলে মনে হচ্ছে—অর্থনীতি তলানির একদম কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে। গত বছরের এই সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছিল ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রকৃত পক্ষে আওয়ামী লীগের আমলেই দেশের অর্থনীতিকে তলানিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যদিও কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছে ভিন্ন কিছু।
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে পরিসংখ্যান দেখিয়েছিল, তা সঠিক নয়। তার মতে, আগের সরকারের আমলে প্রবৃদ্ধির হিসাবটি ছিল মিথ্যা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির ছিল। তাতে কম হারে প্রবৃদ্ধি হবে, সেটা খুব সহজেই অনুমেয় ছিল। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এখন রাজনৈতিক চাপমুক্ত পরিবেশে সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিতে পারছে। সে কারণে প্রবৃদ্ধি কম দেখা যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, চলতি প্রান্তিক এবং আগামী দিনগুলোতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কতটুকু গতি আসে।’
পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির প্রথম প্রান্তিকের সারসংক্ষেপ থেকে দেখা যায়—ওই প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি অনেক কমে গেলেও এই প্রবণতা শুরু হয় গত বছরের জানুয়ারিতে। তখন থেকেই টানা তিন প্রান্তিকে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ছিল ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
অর্থনীতির তিন বৃহৎ খাতের জিডিপি বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম প্রান্তিকে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে মাত্র দশমিক ১৬ শতাংশ, যা আগের বছরের দশমিক ৩৫ শতাংশের চেয়ে কম।
বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধিও আশা জাগাতে পারেনি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে শিল্প খাতের জিডিপির প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় বেশি হারে কমেছে। ৮ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থেকে তা ২ দশমিক ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। সেবা খাতেও প্রায় একই অবস্থা। ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ থেকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলেও দেশের অর্থনীতিতে অচলাবস্থা ছিল। বিনিয়োগে স্থবিরতা ছিল। কিন্তু তখন জিডিপির তথ্য অনেক স্ফীত আকারে দেখানো হতো। এই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ছাত্র আন্দোলনের সময় কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক থাকলেও শিল্প ও সেবা খাতে স্থবিরতা বিরাজ করে। এছাড়া বন্যা এবং গার্মেন্ট খাতে শ্রমিক অসন্তোষের মতো চ্যালেঞ্জ ছিল। সার্বিক বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ওপর তা প্রভাব ফেলেছিল। আর আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকের কাগুজে হিসাবের সঙ্গে তুলনা করায় প্রবৃদ্ধি অনেক কম দেখাচ্ছে। তবে এখন অনিশ্চয়তা অনেক কমে এসেছে। আগামী প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলে আশা করছি।’
এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ-ও জানিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়ে পড়েছে এবং এর ফলে চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসবে। তবে সংস্থাটি মনে করে আগামী অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৫–২৬ অর্থবছরে অর্থনীতি চাঙা হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হবে।
বিবিএসের তথ্য অনুসারে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের ভেতরে স্থিরমূল্যে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়, যা গত ৪ প্রান্তিকের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর ১১টি উপখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে খনিজ ও পাথর উত্তোলন খাতে। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল আর্থিক ও বিমা খাতে।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংক খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি চলমান সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এসব পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথম প্রান্তিকে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমে আসা দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক।’ তিনি মনে করেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের নিম্নগতি এর অন্যতম কারণ। বিশেষ করে শিল্প খাতের সংকট এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে, যা উৎপাদন কার্যক্রমে ধীরগতি নিয়ে এসেছে।
লুকানো হতো খেলাপি ঋণও
এদিকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন থামানো গেলেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতি সঞ্চার হচ্ছে না। হচ্ছে না নতুন বিনিয়োগ। উল্টো খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বেশির ভাগ উদ্যোক্তা। তারা বলছেন, আগের সরকারের আমলের অর্থপাচার, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাটের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া এই অর্থনীতির দুরবস্থা যেন কাটছেই না।
এখনও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারছে না দুর্বল হয়ে পড়া কয়েকটি ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, আগের সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা ফেরত আসছে না। এতে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেছেন, আগে খেলাপি ঋণের তথ্য লুকানো হতো। এখন লুকিয়ে রাখা সব তথ্য প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করছি। বলা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি। তবে পুরো তথ্য সামনে এলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছয় লাখ কোটিও ছাড়াতে পারে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘এই মুহূর্তে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর কোনও চিন্তা আমাদের নেই। তদন্ত শেষ হলে খেলাপি কমানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণের বিষয়ে (আমরা) আন্তর্জাতিক রুলস ফলো করার চেষ্টা করছি। খেলাপি ঋণ বাড়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে তথ্য যাই হোক, এখন আমরা সবই প্রকাশ করে দিচ্ছি, আগে যেটা লুকানো হতো।’
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমরা দেশের আর্থিক খাতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। সামনে খেলাপি ঋণ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে, এখন যা সাড়ে ১২ শতাংশ। আগামী মাসে তা ১৫ শতাংশ, এরপর ১৭ শতাংশ হয়ে ধীরে ধীরে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘এই খেলাপি আগেই হয়ে আছে। এখন তা হিসাবের আওতায় আসবে।’
আশির দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চিত্র
এদিকে অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১ শতাংশ। ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ। পরের দুই অর্থবছরে অর্থাৎ ১৯৮৩-৮৪ ও ১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশ করে। ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া ১৯৭৬-৭৭ ও ১৯৭৮-৭৯ অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ করে। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ শতাংশ। ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ। অবশ্য দেশের প্রথম বাজেট দেওয়া হয় ১৯৭২-৭৩ সালের অর্থবছরে। এরপর ১৯৭৪ সালে দেশের মাথাপিছু জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, মতান্তরে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। আবার ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। একইভাবে ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ।
২০০৫-০৬ থেকে ২০১৪-১৫ প্রবৃদ্ধি
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে থাকাকালে ২০০৬-০৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটা কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ০১ শতাংশ, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আরও কমে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ২০১০-১১ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে কমে ৬ দশমিক ০১ শতাংশ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ০৬ শতাংশে দাঁড়ায়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।