প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত ৬ মাসে এই সরকারের অর্জন অভূতপূর্ব। স্টক মার্কেটে প্রতিটি কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। গত ৬ মাসে কোম্পানিগুলো কেমন পারফর্ম করেছে দেখেন, সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি’র প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
শফিকুল আলম বলেন, আমরা রফতানির তথ্য ম্যানুপুলেট করি না। গত চার মাসে রফতানি গড়ে ১৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। আগে এমন কখন হয়েছে, আমি তো অর্থনীতি বিষয়ে সাংবাদিকতা করেছি। চট্টগ্রামে বন্দরের কার্যক্রম দেখেন সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০০০ সালের পরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের রেকর্ড ভেঙেছে এ বছর। বিশ্বের চারটি বড় কোম্পানি যারা বন্দর হ্যান্ডেলিং করে, তারা একসঙ্গে জানিয়েছে যে, চট্টগ্রাম পোর্ট, মাতারবাড়ি, লালদিয়া টার্মিনাল তারা ম্যানেজ করতে চায়। তারা চায় কারণ তাদের কাছে পরিসংখ্যান আছে। তারা তো দেখছে যে, বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কারখানা বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়, প্রতিবছর কিছু জন্ম হয়। কিছু কিছু বড় হয়। ফলে অসমর্থ্য কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা অর্থনীতির একটি চক্র। আমরা দেখছি যে, আমাদের যথেষ্ট ভালো রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আশা করছি, আরও কিছু পদক্ষেপ যদি আমরা নিতে পারি, চট্টগ্রাম বন্দের সক্ষমতা যদি ফেরে— আপনি নিশ্চিত থাকেন এফডিআই প্রচুর আসবে। আগের সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে জমি দখল করে বসে আছে, কোনও বিনিয়োগকারী আসে না। কোরিয়ান ইপিজেডের ঝামেলা ২০ বছর ধরে জিইয়ে রেখেছে, তাহলে বিদেশিদের কাছে কী বার্তা যায়।
১৪০ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে ভুল তথ্য আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে প্রতিবেদন পুরোটা পড়েছি। ১৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কিন্তু কোন কর্তৃপক্ষ মামলা দেয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘অথরিটিস’ , কিন্তু আমার মনে হয়— হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এখানে জানার ভুল আছে। এটা অথরিটিস না , যারা ভিক্টিম তাদের পরিবার মামলাগুলো করেছে। বাংলাদেশের সরকার করেনি, পুলিশ করেনি। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা আমরা করিনি।
এখন একজন ভিক্টিমের ফ্যামিলি যার ছেলে মারা গেছে, যার ভাই মারা গেছে, উনি যদি এসে কারও বিরুদ্ধে মামলা করেন, সেখানে আমরা তো এটার জন্য দায়ী না। সেক্ষেত্রে আমার কী করার আছে। সেই জায়গায় মনে হয়— ওনাদের ভুল আছে, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো, বলবো যে, প্রতিবেদন সংশোধন করতে হবে। কারণ মামলা তো আমরা করিনি। একজন ভিক্টিমের পরিবার মামলা করলে আমরা তো তাদের বলতে পারি না যে, মামলা না করতে। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় এবং এই মামলাগুলো থেকে যাতে দ্রুত রেহাই পাওয়া যায়, সেজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের ৮ সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওনারা খুব দ্রুত এই মামলাগুলো দেখবেন।
তিনি আরও বলেন, এই জায়গায় আমরা স্বচ্ছতার মধ্যে আছি। এখন পর্যন্ত কিন্তু ৪ জন সাংবাদিক গ্রেফতার হয়েছে, আর কেউ হয়নি। আমরা চাচ্ছি যে, এই মামলাগুলোর মাধ্যমে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।