Homeজাতীয়সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনীর প্রস্তাব

সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনীর প্রস্তাব


সুপ্রিম কোর্ট, বিচারপতিদের বাসভবন, প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি ও সর্বোচ্চ আদালতের এজলাস কক্ষের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সিকিউরিটি ইউনিট। এরই মধ্যে শীর্ষ আদালত থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। তিনি এ বিষয়ে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট একটি কেপিআই (গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা) এলাকা। তাই সেখানে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা থাকতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও অর্থ এই তিন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে রাষ্ট্রের অন্যতম অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলা হয়, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি ও চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার জেরে প্রধান বিচারপতির বাসভবন দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছে। বর্তমানে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যরা সুপ্রিম কোর্ট এলাকা এবং প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিদের বাসভবনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকলেও তাঁরা সাময়িকভাবে নিয়োজিত থাকেন।

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের চিঠিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালতের নিরাপত্তার জন্য বর্তমানে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রায় ৮০০ জন পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সাময়িকভাবে নিয়োজিত। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে যেকোনো সময় তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হতে পারে এবং সে সময় সুপ্রিম কোর্ট অরক্ষিত হয়ে পড়বে। সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা প্রদানের বর্তমানে কাঠামো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। চিঠিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে জুডিশিয়াল প্রোটেকশন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইতালিতে বিচারকদের সুরক্ষার জন্য পৃথক নিরাপত্তা ইউনিট রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে কোর্টস আইন, ২০০৩-এর মাধ্যমে আদালতের নিরাপত্তার স্বার্থে আলাদা নিরাপত্তা বাহিনীর কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের নিরাপত্তায় পৃথক সিকিউরিটি ফোর্সের আলোকে সুপ্রিম কোর্ট সিকিউরিটি ইউনিট গঠনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ, প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতি, বিচারপতিদের বাসভবনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে বিশেষায়িত মার্শাল সার্ভিস প্রতিষ্ঠার জন্য ‘নির্দেশক্রমে অনুরোধ’ করা হলো।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘এ রকম বিশেষ বাহিনী হলে ভালোই হবে। তবে এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের হাতে। পর্যাপ্ত জনবল দিতে হবে। তাহলে এটি কার্যকর হবে।’

উদ্যোগটির বিষয়ে জানতে চাইলে হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মো. আতিকুস সামাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় পৃথক উইং রয়েছে। আমাদের সংসদ সচিবালয়ের জন্য পৃথক উইং রয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের আদলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে পৃথক নিরাপত্তা বাহিনী চাচ্ছি। এই উইংয়ের উদ্দেশ্য হবে বিচারপতি ও আদালতকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আদালত ভবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা, বিচারপ্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করা এবং আদালতকক্ষে শৃঙ্খলা বজায় রাখা।’

প্রধান বিচারপতির জন্য পৃথক চিঠি

প্রধান বিচারপতির নিরাপত্তায় স্পেশাল সিকিউরটি ফোর্স (এসএসএফ) দিতে ১৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, পুলিশ নির্বাহী বিভাগের মৌলিক বাহিনী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাহী বিভাগের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা পুলিশের ওপর আস্থাশীল নন। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীসহ ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য ‘স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স’ (এসএসএফ) গঠন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নিরাপত্তার জন্য পৃথক কোনো নিরাপত্তা বাহিনী না থাকায় তিনি নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে বাইরে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১-এর ৮ (১) ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টাকে দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। পাশাপাশি ৮(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও’ তারা দৈহিক নিরাপত্তা দেবে।

হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো.আতিকুস সামাদ বলেন, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন অনুযায়ী ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’র সংজ্ঞাতে প্রধান বিচারপতিকে অন্তর্ভুক্ত করে এসএসএফ দিতে চিঠি পাঠিয়েছি।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত