ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচল নতুন শহরে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ ও ‘ক্ষমতার’ অপব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
এদিন দুদকের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন মো. আক্তার হোসেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আক্তার হোসেন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্লট বরাদ্দের বিষয়ে শিগগিরই ভালো কিছু তথ্য আমরা আপনাদের জানাতে পারব।’
গত ২৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
অভিযোগে বলা হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজের ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
এ অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আজ দুদক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, ‘অনুসন্ধানের অনেক অগ্রগতি আছে। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য এসেছে। যেগুলোর মধ্যে বিশেষ করে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের ৬০ কাঠা বরাদ্দ-সংক্রান্ত বিষয়ে শিগগিরই ভালো কিছু তথ্য আপনাদেরকে (সাংবাদিক) দিতে পারব।’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নামে মামলা করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের আক্তার বলেন, ‘এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি, সেগুলোয় স্পষ্টভাবেই প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান দল প্রতিবেদন দাখিল করলে আমরা জানাতে পারব।’
দুদক গত ২২ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ওঠা ৩০০ মিলিয়ন ডলার (৩০ হাজার কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনের অভিযোগে দুই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাঁকে ফেরত পাঠাতে বেশ কিছুদিন কথাবার্তার পর আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লিতে চিঠি পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।