মোবাইল ডিভাইসে দীর্ঘ সময় ধরে মাথা ঝুঁকিয়ে তাকানো মেরুদণ্ডের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এমনটাই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়। নিউইয়র্কের স্পাইন সার্জারি ও রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিনের মেরুদণ্ড অস্ত্রোপচার বিভাগের প্রধান ড. কেনেথ হংসরাজের গবেষণায় বলা হয়েছে, মোবাইল ব্যবহারের সময় মাথা নাড়ানোর ধরন মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
গবেষণাটি মার্কিন ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, সাধারণ অবস্থায় মাথা সোজা রেখে থাকার সময় মেরুদণ্ডে ১০ থেকে ১২ পাউন্ড চাপ পড়ে, যা মাথার স্বাভাবিক ওজনের সমান। তবে যখন মাথা ১৫ ডিগ্রি কোণে ঝুঁকে যায়, তখন চাপ বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ পাউন্ডে। ৩০ ডিগ্রিতে ৪০ পাউন্ড, ৪৫ ডিগ্রিতে ৪৯ পাউন্ড এবং ৬০ ডিগ্রি কোণে মাথা ঝুঁকে থাকলে মেরুদণ্ডে ৬০ পাউন্ড চাপ পড়ে।
ড. হংসরাজ বলেছেন, “এটি রীতিমতো মহামারীতে পরিণত হয়েছে। চারপাশে তাকালে দেখা যাবে, সবাই মাথা নুইয়ে হাঁটছে বা বসে আছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে মেরুদণ্ডের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।”
গবেষণায় দেখা গেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে গড়ে দুই থেকে চার ঘণ্টা মোবাইলে বার্তা আদান-প্রদান, ইমেইল চেক করা এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিংয়ে ব্যয় করেন। এই সময়ের পরিমাণ বছরে ৭০০ থেকে ১৪০০ ঘণ্টায় দাঁড়ায়। হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় ৫০০০ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
দীর্ঘ সময় এভাবে মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ পড়লে স্নায়ু ও মেরুদণ্ডের সংযোগস্থলে সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই প্রবণতার কারণে ঘাড়, মাথা ও পিঠে ব্যথার সমস্যা নিয়ে রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে।
সমাধান কী?
মোবাইল ব্যবহারের সময় মাথা না ঝুঁকিয়ে সোজা রেখে চোখ ব্যবহার করা উচিত। মাথার সঠিক অবস্থান এমন হওয়া উচিত যেন দুই কাঁধ ও দুই কান সমান্তরালে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহারের সময় বিরতি নেওয়া এবং সঠিক ভঙ্গিমায় বসা মেরুদণ্ডকে সুস্থ রাখতে সহায়ক হতে পারে।