বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলার ব্যাপক উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন প্রকল্পে চীন সরাসরি সম্পৃক্ত হচ্ছে। গত বছরের আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতীয় কোম্পানি ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) প্রকল্প থেকে সরে যায়। এরপরই অন্তর্বর্তী সরকার বন্দরটির উন্নয়নে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ চীনের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের (CCCC) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই প্রকল্পের আওতায় মংলা বন্দরকে একটি আধুনিক, স্বয়ংক্রিয় ও পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন পোর্ট’-এ রূপান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৪,০৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এবং শেষ হবে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে ৩৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি নতুন কন্টেইনার জেটি নির্মাণ, লোডেড ও আনলোডেড কন্টেইনারের জন্য বিশেষ ইয়ার্ড স্থাপন এবং অটোমেটেড কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সিস্টেম চালু করা। ভবিষ্যতে বন্দরটিকে কোল্ড পোর্টে রূপান্তরেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল মংলা বন্দর সম্প্রসারণে ভারতের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাকাত হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা অনন্তকাল বসে থাকতে পারি না। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর অর্থ ছাড় দ্রুত হবে বলে আশা করছি।”
মংলা বন্দরের এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য সরাসরি চীনে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। নৌপরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন্দরটির আধুনিকায়নের ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বন্দর কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করছে যে, এই উন্নয়ন কাজ শেষ হলে মংলা বন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
সূত্র: https://youtu.be/a4dvNNKBgSk?si=X-uDec8HhWRh891i