শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মুজিববর্ষকে ঘিরে দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উন্মাদনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমরা আইএমএফের কাছে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের জন্য হাত পাতছি বেলআউট করার জন্য। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মুজিববর্ষের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করেছি কিছু ম্যুরাল ও স্ট্যাচু বানিয়ে। মুজিববর্ষে কী ধরণের কাজ হয়েছে, কত টাকার অপচয় হয়েছে তার ডকুমেন্টেশন করার কথা উপদেষ্টা পরিষদে এসেছে। এটা নিয়ে কাজ হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোন কোন মন্ত্রণালয় কত কত টাকা খরচ করেছে তার তালিকা করা হবে। দেখা হবে কী কী খাতে টাকাগুলো গেছে। অনেকক্ষেত্রে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে ফোর্স করা হয়েছে। ফলে কেউ মুজিব কর্নার করেছে, কেউ মুজিবের ম্যুরাল বানাতে বাধ্য হয়েছে। মুজিববাদকে সামনে রেখে টাকা খরচের যে একটা উন্মাদনা ছিল, কত টাকা অপচয় হয়েছে তা জানার জন্য ডকুমেন্টেশন করা হবে। এই সিদ্ধান্ত হয়েছে আজকের কেবিনেটে।’
টাকা অপচয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুজিববর্ষের নামে যা যা অপচয় হয়েছে তার একটা ডকুমেন্টেশন করা হবে। মন্ত্রণালয়গুলো সেই ডকুমেন্টেশনগুলো করবে। আমরা একটা রিপোর্ট দেখেছি সেটা যাচাই করতে পারিনি। পত্রিকাটি বলছে, চার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ১০ হাজার ম্যুরাল ও স্ট্যাচু বানানো হয়েছে। আপনারা দেখেছেন কী পরিমাণে একটা অপচয় হয়েছে। একদিকে উনারা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মূর্তি বানিয়েছেন আবার আইএমএফ-এর কাছে টাকার জন্য হাত পেতেছেন।
মুজিববর্ষে যে সব আমলা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি?— এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে ডকুমেন্টেশন হোক তার পরে দেখা যাবে কী করা যায়। ডকুমেন্টেশনের পরে দেখতে পাবো কী পরিমাণে অপচয় হয়েছে। এগুলো কিন্তু সাধারণ ট্যাক্স পেয়ারের টাকা। এটা টাকা কীভাবে ব্যয় হলো অবশ্যই আমরা দেখবো। আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন পদ্মা সেতুতে দুটি ম্যুরালের জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, চিন্তা করা যায়?
ধূমপান ও তামাকজনিত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য উচ্চ পর্যায়ে কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, এ কমিটির নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ধূমপানে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও ট্যাক্স আদায়ের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। সবকিছু বিবেচনা করে নতুন করে আইনটা নিয়ে ভাবা হবে বলেও জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, নন-কনভেনশনাল সোর্সে তামাক শিল্প বিজ্ঞাপন করে, সেগুলো তারা দেখবেন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ ১১৭টি থেকে বাড়িয়ে ২৬০টি করার চিন্তাভাবনা সরকারের রয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, নতুন করে জরুরি প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করা যায়। আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষেরা ওষুধের উচ্চ দামের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের প্রটেকশন দেওয়ার চিন্তার আলোকে একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। তারা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
উপাত্ত সুরক্ষা আইনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশে যেসব আইন দিয়ে মানুষের মতপ্রকাশে বাধাগ্রস্ত করা হয়, সেগুলো নিয়ে সরকার কাজ করছে। আইন কমিশন দেখবে কোন কোন আইন কালা কানুন। তাদের রিপোর্টে আসবে কোন কোন আইন বাদ দিতে হবে, নতুন করে সংশোধন করতে হবে, সেগুলো তারা বলবেন।