Homeজাতীয়মহাসড়কে চাপ বাড়লেও ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রা

মহাসড়কে চাপ বাড়লেও ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রা


মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়লেও গতকাল বুধবার ঈদযাত্রা ছিল নির্বিঘ্ন। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীদের বাড়তি চাপ ছিল না। ফলে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উদ্‌যাপনে স্বস্তিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যেতে পেরেছেন মানুষ।

ঈদযাত্রার গতকাল ছিল তৃতীয় দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে গতকাল সরকারি ছুটি থাকায় এবং আজ বুধবার ঈদের আগে সর্বশেষ কর্মদিবস হওয়ায় অনেকের ধারণা ছিল, বাড়িমুখী মানুষের চাপ পড়বে। কিন্তু অনেকে রাজধানী ছাড়লেও বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন বা সদরঘাটে লঞ্চ টার্মিনালে তেমন চাপ দেখা যায়নি। বাস, ট্রেন, লঞ্চ স্বাভাবিকভাবেই ছেড়ে গেছে। মহাসড়কের কোথাও কোথাও কিছু যানজট ছাড়া গতকাল পর্যন্ত ঈদযাত্রায় কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি মানুষকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ দুপুরের পর যাত্রীর চাপ বাড়বে। অফিস থেকে আগে বেরিয়ে কিংবা অফিস ছুটির পর বাড়িমুখী হবেন অনেকে। আবার অনেকে যাবেন শুক্রবার। এ দুদিন বেশি চাপ পড়তে পারে।

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে গতকাল ৬৯টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে আন্তনগর ৪৩টি এবং মেইল ও কমিউটার ট্রেন ২৬টি। তবে এর মধ্যে সকালের দিকে তুরাগ কমিউটার পৌনে এক ঘণ্টা বিলম্বে স্টেশন ছেড়ে গেছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এই কড়াকড়ির কারণে ফলে প্ল্যাটফর্মে বাড়তি ভিড় নেই। যাত্রীরা স্বস্তিতে ট্রেনে উঠতে পারছেন। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারগুলোতে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। আন্তনগর ট্রেনগুলোর ঈদযাত্রার সব আসনের টিকিট অনলাইনে অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে আবদুর রাজ্জাক নামের এক যাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি সরকারি চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার ছুটি পাওয়ায় আগেই বাড়ি চলে যেতে পারছেন। ট্রেনের টিকিট আগেই কেটে রেখেছিলেন। স্টেশনে এসে ট্রেনে উঠতে কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করছেন, যাত্রা নির্বিঘ্ন হবে।

রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে কথা হলো যাত্রী হাসান ইমামের সঙ্গে। পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ঈদ করতে যাচ্ছেন রংপুরে গ্রামের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘ভিড়ভাট্টা এড়ানোর জন্য আগেভাগেই চলে যাচ্ছি। তবে আসনের টিকিট পাইনি। স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে যাচ্ছি। ট্রেনে যেহেতু উঠতে পেরেছি, বাড়িও পৌঁছে যাব।’

কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, ‘টিকিটবিহীন কোনো যাত্রী ট্রেনে উঠবে না। যারা টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা আসনের টিকিট পায়নি, তারা স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে যেতে পারবে।

প্রতিদিন একটু একটু করে যাত্রী বাড়ছে। আমরা আশা করছি, এবার মানুষ ট্রেনে স্বস্তিতে যেতে পারবে।’

মহাসড়কে বাড়ছে চাপ

রাজধানীর তিনটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী থেকে দূরপাল্লার বিভিন্ন গন্তব্যের বাস ছেড়ে গেছে। বিলাসবহুল বিভিন্ন পরিবহনের বাসও ছেড়েছে। বাস ছাড়া নিয়ে যাত্রীদের তেমন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ শোনা গেছে।

গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগের বাড়তি যাত্রীর চাপ নেই। অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরা নির্ধারিত বাসে উঠছেন। যাঁরা অগ্রিম টিকিট কাটেননি, তাঁরা টিকিটের জন্য বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির কাউন্টারে যাচ্ছেন। যানবাহনের চাপ বাড়ায় গাবতলী-আমিনবাজার এলাকায় যানজট তৈরি হচ্ছে। গাবতলী থেকে বাস বের হতে বেশ সময় লাগছে।

উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা এস আর ট্রাভেলসের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. আমীনূন্নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, যাত্রীর চাপ কিছু বাড়লেও সেটা এখনো স্বাভাবিক। সাভার এলাকায় কিছু যানজট হচ্ছে। তবে তাঁদের প্রতিটি বাস নির্ধারিত সময় ছেড়ে যাচ্ছে।

যানবাহনের চাপ বাড়লেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শিকারিকান্দা বাইপাস মোড় হয়ে ময়না মোড়, হাক্কানি মোড়, পাটগুদাম ব্রিজ মোড় থেকে শম্ভুগঞ্জের চায়না মোড় পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে যানজট হয় গতকাল।

যমুনা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চলের পথে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। তবে যানজট নেই। আগের ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ২৯ হাজার ২৩৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৫৫০ টাকা। যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম—উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) এম এ মান্নান বলেন, গতকাল সকাল ছয়টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ১২ হাজার যানবাহন পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় পারাপার হয় ২১ হাজার ৬৫৪টি যানবাহন। আগের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সেতুতে মোটরসাইকেলের চাপ আছে।

যাত্রীর চাপ নেই সদরঘাটে

রাজধানীর সদরঘাটে ঢাকা নদীবন্দরে গতকালও ঈদে বাড়িমুখী মানুষের চাপ দেখা যায়নি। পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চের যাত্রী কমেছে। গতকাল সকাল ও রাতের লঞ্চে কিছুটা যাত্রী হয়েছে।

ঢাকা নদীবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা নদীবন্দর থেকে গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত বিভিন্ন গন্তব্যে ৩২টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এবং ঢাকায় এসেছে ২০টি। রাত পর্যন্ত ৬৫ থেকে ৭০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যেতে পারে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত