ভোটকেন্দ্র নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটি সংশোধন হলে ভোটকেন্দ্র-সংক্রান্ত কমিটির দায়িত্ব থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) বাদ দেওয়া হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসির সীমানা পুনর্নির্ধারণ, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, জাতীয় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত ও তদারকি এবং উপকারভোগী পর্যায়ে আলোচনাবিষয়ক কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সভার পর কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সভায় ভোটকেন্দ্র নীতিমালা নিয়ে কথা বলেছি। আমরা একটা খসড়া দাঁড় করানোর অবস্থায় আসছি।’
আগে সব সময় জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করতেন ইসি কর্মকর্তারা। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচনের আগে এ জন্য আলাদা কমিটি গঠন করে কমিশন। মহানগর ও জেলার জন্য গঠিত কমিটিতে ডিসি এবং উপজেলা ও থানা পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র-সংক্রান্ত কমিটিতে ইউএনওকে আহ্বায়ক করা হয়। এখন ভোটকেন্দ্র নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন।
নীতিমালা সংশোধন হলে ভোটকেন্দ্র কমিটি থেকে ডিসি ও ইউএনওদের বাদ দেওয়া হতে পারে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটি কমিশন সভায় উপস্থাপন করলে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এ বিষয়ে কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করি ঈদের আগে এ বিষয়ে জানাতে পারব।’
নতুন দলের নিবন্ধনের গণবিজ্ঞপ্তি বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রিট হয়েছে। আদালত থেকে রুলের আদেশ এখনো আসেনি। এলে সেটা দেখার পর বলতে পারব, সুনির্দিষ্টভাবে আদেশ না দেখে বলা যাবে না। আগামী সপ্তাহে রায়ের কপি হয়তো পাব, তখন বলতে পারব।’
দেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল বলেন, পর্যবেক্ষকদের জন্য আমরা একটা খসড়া দাঁড় করেছি। খসড়াটি কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে।
সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আগের পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, কিছু কিছু তো বাতিল হবেই। কমিশন সিদ্ধান্ত নিলে সবগুলো বাতিল হতে পারে। আমরা বিদ্যমান নীতিমালা ও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুসারে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করে সামনের দিকে আগাচ্ছি।’
বিগত সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা, ডিসি ও এসপিরা বিতর্কিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গতকালের সভায় আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল বলেন, ‘এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট যাঁরা ছিলেন, তাঁরা অনেকেই নিঃসন্দেহে বিতর্কিত। যাঁরা বিতর্কিত ছিলেন তাঁদের বিষয়ে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, তাঁদের তো চাকরি চলে গেছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হোক বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হোক—সরকারও নিচ্ছে, কমিশনও নিচ্ছে। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না, এটিই মনে করছি।’