Homeজাতীয়ভাতাভোগী বাড়ছে আরও পাঁচ লাখ

ভাতাভোগী বাড়ছে আরও পাঁচ লাখ


সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪০২ জন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা করে বাড়ানো হবে। এ জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সব থেকে বেশি সুবিধা পেতে যাচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা। ভাতাভোগী চা-শ্রমিকদের সংখ্যা ৭৭ হাজার জন বাড়ানোর পাশাপাশি তাঁদের মাসিক ভাতাও বাড়ানো হবে। চা-শ্রমিকদের সন্তানদের নতুন করে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি উইং কাজ করে। এসব দপ্তর সূত্রে নতুন ভাতাভোগী ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর তথ্য পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা সূত্র জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। কোনো কর্মসূচির ভাতাভোগীর সংখ্যা ও ভাতা কী পরিমাণ বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। এরপর উপদেষ্টা পরিষদ ভাতাভোগী ও ভাতার হার বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এখন উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ রাখা হবে।

বর্তমানে ৬০ লাখ মানুষকে মাসে ৬০০ টাকা করে বয়স্ক ভাতা দেয় সরকার। আগামী অর্থবছরে ৬১ লাখ মানুষকে ৬৫০ টাকা করে এই ভাতা দেওয়া হবে। এই কর্মসূচিতে বর্তমানে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ৯৭ টাকা খরচ হয়। তা বেড়ে আগামী অর্থবছরে হবে ৪ হাজার ৯৯১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

বর্তমানে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার বিধবাকে মাসে ৫৫০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে ২৯ লাখ বিধবাকে মাসে ৬৫০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। এই ভাতা দিতে চলতি অর্থবছরে ১ হাজার ৮৪৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। আর আগামী অর্থবছরে এই খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এখন ৩২ লাখ ৩৪ হাজার প্রতিবন্ধীকে মাসে ৮৫০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার প্রতিবন্ধীকে মাসে ৯০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। এই ভাতার খরচ ৩ হাজার ৩২১ কোটি ৭৭ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩ হাজার ৭৫২ কোটি ৮ লাখ টাকা।

শিক্ষা উপবৃত্তি পাওয়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১ লাখ থেকে কমে ৮১ হাজার জন হচ্ছে। এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের অন্য কর্মসূচি থেকে যারা শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে, তাদের এই কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার ভাতাভোগীর সংখ্যা কমেছে।

৬০ হাজার চা-শ্রমিককে বছরে এককালীন ৬ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। নতুন করে তাঁদের এককালীন ভাতা না দিয়ে মাসে ৬৫০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। ভাতাভোগীর সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার জন হবে। এই খাতে ব্যয় ৩৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ১০৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা হবে।

চা-শ্রমিকদের সন্তানদের নতুন করে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হবে। প্রথমবার ৫ হাজার জনকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে। এর বাইরে চা-শ্রমিকদের দেড় হাজার টাকা করে প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হবে।

বর্তমানে ১৪ হাজার ১২৯ জন হিজড়াকে মাসে ৬০০ টাকা করে মোট ৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ভাতা দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরে এদের ভাতার পরিমাণ ৫০ টাকা করে বাড়বে। এর ফলে এই খাতে মোট খরচ হবে ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। হিজড়াদের সন্তানদের শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ সহায়তা ভাতা আগের মতোই দেওয়া হবে।

বর্তমানে ১৬ হাজার ৪৯৮ জন বেদেকে মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। ভাতাভোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ১৪৮ জন করা হবে। ভাতার পরিমাণ বেড়ে হবে ৬৫০ টাকা। এর বাইরে বেদেদের ৪ হাজার ৩৯৮ জন সন্তানকে শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হতো। আগামী অর্থবছর থেকে ৪ হাজার ৮৩৮ জনকে বর্তমান হারেই শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হবে।

বর্তমানে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮০৩ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪০২ জন করা হচ্ছে। আর ভাতার পরিমাণ বাড়বে ১৫০ টাকা করে। এ ছাড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ২৮ হাজার ৯১২ জন শিক্ষা উপবৃত্তি পাচ্ছে। এই ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে ৩১ হাজার ৯০২ জন করা হচ্ছে। এদের ভাতার পরিমাণ আগের মতোই থাকবে।

এ ছাড়া ক্যানসার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস রোগীর আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি আগের মতোই অব্যাহত থাকবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মার্চের মধ্যেই এপ্রিলের ভাতা

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ১১ লাখ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ভাতা দেওয়া হয়। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তাদের ভাতার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ইতিমধ্যে ৯৩ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭ জনকে ভাতা দেওয়া হয়েছে। অন্যদের ভাতাও চলতি মাসের মধ্যে দেওয়া হবে।

সমাজকল্যাণসচিব ড. মো. মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সরকারের ম্যানডেট হলো বৈষম্যবিরোধী সমাজ বিনির্মাণ। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের উন্নয়ন করাই সরকারে মূল লক্ষ্য, সমাজের মধ্যে যাতে শ্রেণি ব্যবধান না হয়। এ লক্ষ্য সামনে রেখে মন্ত্রণালয় থেকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগী ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত