আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক জোটের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে সাইডলাইনে কোনও বৈঠক হবে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দিল্লি। শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকালে ভারতের রাজধানীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা আপনারা জানতে চাইছেন, সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমার কাছে শেয়ার করার মতো কোনও আপডেট নেই।’
এর আগে দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছিল, এপ্রিলের ২ থেকে ৪ তারিখ ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর জোট বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে (সাইডলাইনে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করা যায় কিনা, ঢাকার কাছ থেকে তারা সেই প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু সেই বৈঠক হবে কিনা, ভারতের পক্ষ থেকে তার এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, এখনই দুই দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক করাটা ঠিক হবে কিনা–তা নিয়ে ভারত সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে স্পষ্টতই দ্বিধাবিভক্তি আছে।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক আয়োজনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভারত তাতে সাড়া দেয়নি এবং সেই বৈঠকও হয়নি। দুই নেতার মধ্যে অবশ্য মাঝে টেলিফোনে সরাসরি কথাবার্তা হয়েছে।
সর্বোচ্চ পর্যায়ে মুখোমুখি বৈঠক না হলেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এর মাঝে একাধিকবার বৈঠকে বসেছেন। নিউ ইয়র্কে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে, বৈঠক হয়েছে ওমানের রাজধানী মাস্কটেও। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি গত ডিসেম্বরে ঢাকায় গিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন তার কাউন্টারপার্ট জসীমউদ্দিনের সঙ্গেও। ফলে এটা বলা যেতেই পারে, দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের চ্যানেলগুলো সব চালু আছে।
মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও বিবিসির সঙ্গে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আমাদের ঠিকই আছে, সব ভালোই চলছে। কথাবার্তাও হচ্ছে।’ তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রায় সাড়ে সাত মাস কেটে গেছে, কিন্তু এখনও প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তার মুখোমুখি বৈঠক ও আলোচনা সম্ভব হয়নি। সপ্তাহ দুয়েক পরে ব্যাংককেও সেটা আদৌ হবে কিনা, এখনও বোঝা যাচ্ছে না।