প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে অনুদান প্রদানের পরিবর্তে বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) মহাপরিচালক জ্যাকব গ্রানিট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র হিসেবে স্বাস্থ্যসেবার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা সুইডিশ কর্মকর্তাকে বলেন, আমি সামাজিক ব্যবসার প্রচারণা চালাচ্ছি, কারণ অনুদানের অর্থ একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান।
প্রধান উপদেষ্টা নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট সমাধানে সুইডেনের সহায়তা কামনা করেন, যার প্রচুর সম্পদ অব্যবহৃত রয়েছে এবং রফতানির জন্য প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমরা জ্বালানি সংকটে আছি এমন একটি দেশ। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নেপালের বিশাল সম্পদ রয়েছে এবং আমরা তা আনতে ইচ্ছুক। এটি কাজের জন্য সিডা আমাদের উভয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারে।
সিডা বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য সুইডিশ সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করে। বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় সুইডেনের বর্তমান সহযোগিতা কৌশল ২০২১-২০২৫ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত।
বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন কৌশল থেকে সিডা ২০২৪ সালে প্রায় এক বিলিয়ন এসইকে (সুইডিশ মুদ্রা) সরবরাহ করেছে। সংস্থাটি ২০২৪ সালে মানবিক সহায়তা হিসেবে ১২ কোটি ৭৭ লাখ এসইকে দিয়েছে, যার বেশিরভাগই বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক এবং কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য।
সিডার মহাপরিচালক জ্যাকব গ্রানিত বলেন, ‘‘পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবং বাংলাদেশের জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ কীভাবে তাদের সহায়তা কার্যকর করা যায় তার উপায় খুঁজছেন তারা। এছাড়াও আমরা কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে পারি এবং আমাদের সঠিক ধরণের সমর্থন নিশ্চিত করতে পারি তার উপায়ও খুঁজছি।’’ এসময় সুইডিশ কর্মকর্তা সরকারের সংস্কার উদ্যোগ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
প্রধান উপদেষ্টা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে সুইডেনের সমর্থন দেশের রূপান্তরে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই, তবে আমরা ভিত্তি স্থাপন করতে চাই।
তিনি বলেন, বিগত শাসনামলে বাংলাদেশে সবকিছু ভেঙে পড়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুনর্গঠনে কাজ করছে।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত উইকস রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলার জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন এবং সুইডেনের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।