স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত ও নির্যাতিত জনগণের পাশে আছে। তাদের ন্যায্য দাবিকে বাংলাদেশ সবসময় সমর্থন করে আসছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুসলমানরা সত্যিকারের ধর্মপরায়ণ। এ জন্য বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে। ন্যায় ও মানবতার পক্ষে। গত ১২ এপ্রিল ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সংহতির বহিঃপ্রকাশ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ফয়সল হাসান জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ, ফিলিস্তিন টিভির প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর, আল আকসা মসজিদের নামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্মারক পাসপোর্ট ইস্যুসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ফিলিস্তিন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’’ ঢাকার ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘আরব বিশ্বসহ অন্য মুসলিম দেশগুলো যা পারেনি, বাংলাদেশ তা করে দেখিয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনের ভাইবোনেরা জানতে চায়—নিশ্চয়ই এমন কোনও বিশেষ কারণ রয়েছে, যার কারণে বাংলাদেশের জনগণ ইসরায়েলের বর্বর হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এত বড় প্রতিবাদ সমাবেশ করে দেখিয়েছে।’’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশের মুসলিমদের সত্যিকারের ধর্মপরায়ণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সংহতি ও সহমর্মিতা সম্পর্কে ফিলিস্তিনের জনগণকে আরও সচেতন করতে আগামী ১৭ মে ‘ফিলিস্তিন টিভি’র একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে। তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহপূর্বক একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করবে। যা পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিন টিভিতে প্রচারিত হবে।’’ রাষ্ট্রদূত আল আকসা মসজিদের নামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি স্মারক পাসপোর্ট ইস্যুর জন্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন। উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে আল আকসা মসজিদের নামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্মারক পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে বলেও রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) শামীম খানসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।