মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সই হওয়া স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কর্মিরা অস্ট্রেলিয়ার শ্রম বাজারের চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া সরকারের মধ্যে এসওপি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ফয়সল হাসান জানান, বাংলাদেশের পক্ষে এসওপিতে সই করেন পুলিশের আইজি বাহারুল আলম। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সই করেন দেশটির জয়েন্ট এজেন্সি টাস্কফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার মার্ক হোয়াইটচার্চ। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসন এবং মানবপাচার গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করে এবং নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও বৈধ অভিবাসনের নীতিগুলিকে বিপন্ন করে। এটি কেবল অসংখ্য জীবনকেই বিপন্ন করে না বরং দক্ষতাভিত্তিক এবং বৈধ অভিবাসনের পথে এটি হুমকিস্বরূপ। আমরা বিপজ্জনক এবং জীবন-হুমকিপূর্ণ যাত্রা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের একটি নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করা যায়।’
বাংলাদেশ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন নীতিমালা মেনে একটি নিরাপদ এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘এর অংশ হিসেবে সোমবার অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের এই এসওপি সই হয়েছে। এই এসওপি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। এটা প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিনিময়, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর সহায়তা দেবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র অত্যন্ত বিস্তৃত। আমাদের পারস্পরিক বাণিজ্য, উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রয়েছে বৈচিত্র্যময় কর্মীবাহিনী ও শ্রমিক। এর মধ্যে আছে দক্ষ পেশাদার থেকে শুরু করে আধা-দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক। যারা অস্ট্রেলিয়ার শ্রম বাজারের চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার মোকাবিলায় একটি সামগ্রিক ও সমন্বিত আঞ্চলিক পদ্ধতির প্রয়োজন।’ উপদেষ্টা এ সময় থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট দেশগুলিতে বিস্তৃত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহযোগিতামূলক কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করেন।