Homeজাতীয়প্রাথমিক শিক্ষকেরই প্রাপ্য সর্বোচ্চ সম্মান

প্রাথমিক শিক্ষকেরই প্রাপ্য সর্বোচ্চ সম্মান


বেতন গ্রেড পরিবর্তন, যথাসময়ে পদোন্নতিসহ শিক্ষকদের অধিকাংশ দাবির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগতভাবে একমত বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। গত রোববার সচিবালয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান উপদেষ্টা।

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘শিক্ষকদের অনেক দাবির সঙ্গে আমি নীতিগতভাবে একমত পোষণ করি। নীতিগতভাবে একমত পোষণ করা আর বাস্তবায়ন করার মধ্যে ফারাক রয়ে গেছে। এটি দূর করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শিক্ষকদের বেতন গ্রেড পরিবর্তনের দাবি। এটা অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি।’

উপদেষ্টা বলেন, প্রধান শিক্ষকদের চাকরি দ্বিতীয় শ্রেণি (দশম গ্রেড) ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৪ সালে। অথচ এখন পর্যন্ত এটি বাস্তবায়িত হয়নি। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে মামলা নিষ্পত্তি করে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে। এটি আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। এরপর সহকারী শিক্ষকদেরও বেতন গ্রেড বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষকেরাই শিশুদের শিক্ষাজীবনের ভিত রচনা করেন মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের সর্বোচ্চ সম্মান ও প্রাপ্য সম্মানী দিতে হবে।

অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় জানান, প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গঠিত পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ পর্যায়ের শিক্ষার সংস্কারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। এ ক্ষেত্রে আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমাদের দেশে শিক্ষা নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এতে শিক্ষায় অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আমরা না বুঝে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পক্ষপাতী নই। এ বিষয়ে যাঁরা বিশেষজ্ঞ, তাঁদের যুক্ত করে কমিটি করেছি। তাঁরা সমগ্র বিষয় পর্যালোচনা করে সুপারিশমালা তৈরি করবেন।’

উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, পরামর্শক কমিটি ৩০ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন দেবে। তারপর সে অনুযায়ী সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়গুলো যেভাবে চলা দরকার, সে অনুযায়ী চলছে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সার্বিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার।’

আলাপকালে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এসব অভিযোগ দূর করতে সব ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বদলি নিয়ে যেসব অভিযোগ শোনা যায়, সেগুলোর অবশ্যই সত্যতা রয়েছে। অনেকে জীবনের প্রয়োজনে শহরমুখী হতে চান। এ জন্য দেখা যায়, শহরে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশি, গ্রামে কম। এ ক্ষেত্রে (বদলিতে) যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি না হয়, বিষয়টি যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়, সে জন্য পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর বাইরেও যেসব সেবা রয়েছে, সেখানেও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে। এসব বিষয়ে এরই মধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে বিশেষ পরিকল্পনার কথাও জানান উপদেষ্টা। তিনি জানান, এখন ১৭ হাজারের বেশি সহকারী শিক্ষক এবং ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতে বিষয়ে নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকের বাইরেও বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে শূন্যতা রয়েছে। এসব পদ পূরণে শিগগির বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ কবে নাগাদ সৃষ্টি হবে, এ প্রশ্নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ সৃষ্টির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে এ পদে সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া হবে। এতে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।’

সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিতে উদ্যোগের কথাও জানান অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায়। তিনি বলেন, মামলা জটিলতার কারণে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার চেষ্টা করছে দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করতে। অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের ‘মিড ডে মিল’ (দুপুরের খাবার) চালুর উদ্যোগের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তারা কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে পাঁচ দিন রুটি, ডিম, দুধ, কলা অথবা মৌসুমি ফল পাবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত