Homeজাতীয়প্রাথমিকে ক্যাডার পদ সৃষ্টির সুপারিশ পরামর্শক কমিটির

প্রাথমিকে ক্যাডার পদ সৃষ্টির সুপারিশ পরামর্শক কমিটির


সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ হয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মাধ্যমে। আর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয় পদোন্নতি এবং পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি। এসব নিয়োগ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) আদলে ক্যাডার ভিত্তিতে করার জন্য সুপারিশ করেছে প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংস্কার পরামর্শক কমিটি।

পরামর্শক কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক শিক্ষার চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট কার্য পরিসরের কিছু দপ্তরের কর্মকর্তারা ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সৃজনের বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুপারিশ করা হলো।’

গত অক্টোবরে প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংস্কারে পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমদকে। কমিটিতে একজন সদস্যসচিব এবং সাতজন সদস্য ছিলেন।

জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মনজুর আহমদ বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা খাত অনেক বড়। শিক্ষকেরা প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার করার দাবি করেছেন। কমিটির এ দাবিকে যৌক্তিক মনে করে সুপারিশ করেছি। আমরা মনে করি, প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার করা হলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৩ এর তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৫ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন।

প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংস্কারে গঠিত পরামর্শক কমিটি শিক্ষকদের পেশাগত চারটি ধাপ নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো শিক্ষক, সিনিয়র শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক।

কমিটি প্রি-সার্ভিস একাডেমিক প্রোগ্রাম চালুর সুপারিশ করেছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষক পদে যোগদানের জন্য একটি প্রাথমিক শিক্ষা প্রি-সার্ভিস একাডেমিক প্রোগ্রাম চালু করা অপরিহার্য। প্রাথমিকভাবে এই ডিগ্রি/ডিপ্লোমাধারীদের শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যায়ক্রমে তা বাধ্যতামূলক করা করা যায়। প্রি-সার্ভিস একাডেমিক প্রোগ্রাম চালু না হওয়ার আগপর্যন্ত বিটিপিটি প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু যুক্তিসংগতভাবে কমিয়ে প্রায়োগিক দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

পরামর্শক কমিটি বিভাগের পরিবর্তে আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে বলেছে, ‘আটটি বিভাগের প্রতিটির আকার ও জনসংখ্যা সমান নয়। বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায়ও বিভাগগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ কারণে দেশকে অনধিক ১৬টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলে প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত পরিচালকের পদ সৃষ্টি করা যেতে পারে। আঞ্চলিক কার্যালয় সৃষ্টি হলে বিভাগীয় কার্যালয়গুলো বিলুপ্ত করা যেতে পারে।’

পারস্পরিক বদলি বিবেচনারও সুপারিশ করে কমিটি বলছে, যেসব পদ পারস্পরিক বদলিযোগ্য করা হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে না, সেসব পদ পারস্পরিক বদলিযোগ্য করার সুপারিশ করা হলো।

কমিটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা/থানার বাইরে বদলি হতে পারবেন না—এমন তথ্য রাখারও সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া শিক্ষকদের কাজের চাপ কমানো, সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ, দ্রুত শূন্য পদ পূরণ ও নিয়োগ, টিফিন ভাতা বৃদ্ধি, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর বিবেচনা, প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণেরও সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার করার সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমীন। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে এর আগে শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) সব মিলিয়ে ক্যাডার সংখ্যা ২৬টি। মোট দুই ভাগে এসব ক্যাডার বিভক্ত। একটি সাধারণ ক্যাডার, অন্যটি কারিগরি ক্যাডার। ক্যাডারগুলো হলো প্রশাসন, আনসার, নিরীক্ষা ও হিসাব, সমবায়, শুল্ক ও আবগারি, পরিবার পরিকল্পনা, খাদ্য, পররাষ্ট্র, তথ্য, পুলিশ, ডাক, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক, কর, বাণিজ্য, সড়ক ও জনপথ, গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, বন, স্বাস্থ্য, রেলওয়ে প্রকৌশল, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, পরিসংখ্যান, কারিগরি শিক্ষা, কৃষি ও সাধারণ শিক্ষা।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত