বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা আছে। আগামী ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ওমানে অনুষ্ঠিতব্য অষ্টম ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সে এই বৈঠক হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সে উভয় নেতা অংশগ্রহণ করবেন। অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।’
২০১৬ থেকে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সের আয়োজন করে আসছে। ২০২৩ সালে ষষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্স ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী ৬০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে এবারের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।
কী নিয়ে আলোচনা
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে ভারতের প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, মিডিয়াসহ প্রায় সবাই বাংলোদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু করে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ফোনালাপ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে বৈঠক, ডিসেম্বরে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাওয়া হচ্ছে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ। অন্যদিকে সম্প্রতি ভারতের সামরিক বাহিনীর প্রধান বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ স্বাভাবিক পর্যায়ে যাবে না।’
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের নেতিবাচক প্রচারণা এবং মনোভাব আগের থেকে এখন অনেক কমে এসেছে। দুই দেশের মধ্যে যেসব মেকানিজম রয়েছে সেগুলো ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে।’
সম্প্রতি সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী মাসে দিল্লিতে বাংলোদেশের বিজিবি ও ভারতের বিএসএফ প্রধানের মধ্যে বৈঠক হবে। সেখানে সীমান্ত নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে আলোচনা হবে।’
দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ থাকতে পারে এবং এটাই স্বাভাবিক জানিয়ে তিনি বলেন, ’নিকট প্রতিবেশীর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সম্পর্ক এগিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হবে। দ্বিপক্ষীয় কিছু জরুরি বিষয় ও সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনের বিষয়েও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হতে পারে।’
২০২৬ সালে গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এবং সেটি নবায়নের তাগিদ দেওয়া হতে পারে। এছাড়া তিস্তা নদী বিষয়েও দুই পক্ষের মধ্যে কথা হতে পারে বলে তিনি জানান।