Homeজাতীয়পরমাণু শক্তি এবং বৈশ্বিক রাজনীতির ভারসাম্য

পরমাণু শক্তি এবং বৈশ্বিক রাজনীতির ভারসাম্য


মানব ইতিহাসে এমন কিছু আবিষ্কার হয়েছে, যা একদিকে অসীম সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে, আবার অন্যদিকে ভয়াবহ ধ্বংসের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। পরমাণু শক্তি এমনই এক যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করলেও বৈশ্বিক রাজনীতির জটিলতা বাড়িয়েছে বহুগুণ। এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে মানব সভ্যতা এগিয়ে যেতে পারে অগ্রগতির এক অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু এর অপব্যবহার গোটা পৃথিবীকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথমবারের মতো পরমাণু শক্তি সামরিক কাজে ব্যবহার হয়। হিরোশিমা ও নাগাসাকির ওপর দুটি পরমাণু বোমা নিক্ষেপের পর সারা পৃথিবী বুঝতে পারে, এই শক্তি কেবল উন্নয়নের হাতিয়ার নয়, এটি মানবজাতির জন্য এক চরম হুমকি হিসেবেও কাজ করতে পারে। পরমাণু শক্তির সেই অধ্যায় এখনো চলমান। তবে আজ তা কেবল সামরিক শক্তি হিসেবে নয়, রাজনীতির এক শক্তিশালী উপাদান। 

পরমাণু শক্তির জন্ম এবং প্রথম ব্যবহার

পরমাণু শক্তির ধারণা প্রথম উঠে আসে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণার মধ্য দিয়ে। ১৯৩৮ সালে জার্মান বিজ্ঞানী অটো হান এবং লিজে মাইটনার পারমাণবিক বিভাজন (ঘঁপষবধৎ ঋরংংরড়হ) আবিষ্কার করেন। তারা দেখান, পরমাণু বিভাজিত হলে বিপুল শক্তি উৎপন্ন হয়। এই তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের সামনে নতুন এক শক্তির দ্বার উন্মোচন করে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ‘ম্যানহাটন প্রজেক্ট’ নামে একটি গোপন গবেষণা কর্মসূচি চালু করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এমন এক বোমা তৈরি করেন, যা আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।

১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে এই বোমা নিক্ষেপ করা হয়, যার ফল ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। হিরোশিমায় ‘লিটল বয়’ নামের প্রথম বোমা নিক্ষেপের পর প্রায় ৭০ হাজার মানুষ সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। কয়েক বছরের মধ্যে এই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। একইভাবে নাগাসাকিতে ‘ফ্যাট ম্যান’ বোমা নিক্ষেপে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়। এই ধ্বংসযজ্ঞ বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়, পরমাণু শক্তি মানব সভ্যতার জন্য কতটা বিধ্বংসী হতে পারে।

পরমাণু শক্তির সম্ভাবনা- উন্নয়নের হাতিয়ার

পরমাণু শক্তির ব্যবহার যদি সঠিক পথে পরিচালিত হয় তাহলে এটি উন্নয়নের এক বিশাল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। আজ বিশ্বে বিদ্যুৎ উৎপাদন, চিকিৎসা, কৃষি এবং গবেষণার ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্বের শক্তির চাহিদা মেটাতে পরমাণু শক্তি একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। এটি পরিবেশবান্ধব। কারণ, এটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ করে না। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্স তার প্রায় ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ পরমাণু শক্তি থেকে উৎপন্ন করে।

এই শক্তির অন্যতম সুবিধা হলো এর উৎপাদন ধারাবাহিক এবং নিরবচ্ছিন্ন। কয়লাভিত্তিক বা প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের তুলনায় এটি অনেক বেশি কার্যকর এবং দীর্ঘমেয়াদি। তবে পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যার এখনো পুরোপুরি সমাধান হয়নি।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে পরমাণু প্রযুক্তির ব্যবহার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিশেষত, ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেডিওথেরাপি এই প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। রেডিওথেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা সম্ভব, যা অনেক রোগীর জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে। তাছাড়া রোগ নির্ণয়ে পিইটি (পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি) স্ক্যান এবং এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত এবং নির্ভুল রোগ নির্ণয়ে সহায়ক। এ ধরনের উন্নত প্রযুক্তি চিকিৎসাকে আরও কার্যকর ও উন্নত করে তুলেছে।

কৃষিক্ষেত্রে পরমাণু প্রযুক্তির ব্যবহার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। উদাহরণস্বরূপ, ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য উন্নত বীজ উদ্ভাবন এবং মাটির উর্বরতা যাচাইয়ে পরমাণু প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে রেডিয়েশন প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি কার্যকর। পাশাপাশি খাদ্য সংরক্ষণে বিকিরণ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, যা খাদ্যের পুষ্টিগুণ অক্ষুণœ রেখে এর দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ সম্ভব করে।

পরমাণু শক্তি একটি পরিচ্ছন্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তির উৎস। এটি কার্বন নিঃসরণ করে না, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে যখন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তখন পরমাণু শক্তি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।

পরমাণু শক্তি গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। বিশেষত, মহাকাশ গবেষণায় এটি অনন্য ভূমিকা রাখছে। দূর মহাকাশে অভিযান পরিচালনা করতে শক্তির চাহিদা পূরণে পরমাণু শক্তি অত্যন্ত কার্যকর। দীর্ঘস্থায়ী মহাকাশ মিশনের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই শক্তির উৎস হিসেবে পরমাণু প্রযুক্তির ব্যবহার ভবিষ্যৎ গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

পরমাণু শক্তি এবং বৈশ্বিক রাজনীতি

বর্তমান বিশ্বে পরমাণু শক্তি বৈশ্বিক রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী উপাদান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সামরিক ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্য বদলে দিয়েছে। শক্তিধর দেশগুলোর জন্য এটি আধিপত্য বিস্তারের একটি কৌশলগত অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে শুরু হওয়া স্নায়ুযুদ্ধ পরমাণু প্রতিযোগিতার জন্ম দেয়।

উভয় পক্ষই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াতে থাকে। ১৯৬০-এর দশকে উভয় দেশই এমন পরিমাণ পরমাণু অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল যে, একে অপরকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখত। এই প্রতিযোগিতা শুধু সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য ছিল না, এটি ছিল এক ধরনের রাজনৈতিক চাপ তৈরি করার অপকৌশল।

স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পরও পরমাণু শক্তি আধুনিক বিশ্বে প্রভাবশালী। চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলো তাদের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে। চীন তার সামরিক শক্তি বাড়াতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নতুন ভূরাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছে। উত্তর কোরিয়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তার পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব এই অঞ্চলে পরমাণু প্রতিযোগিতাকে তীব্র করেছে। ১৯৯৮ সালে উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা প্রকাশ করে। এটি শুধু তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও খারাপ করছে না, বরং এই অঞ্চলে পরমাণু সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যু এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে কেন্দ্র করে এই বৈরিতা আজও বিদ্যমান।

পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ

বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন চুক্তি এবং উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যদিও এসব চুক্তি ও প্রচেষ্টা একটি স্থিতিশীল বিশ্ব গঠনে সহায়ক হয়েছে, তবু এর কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন থেকেই যায়।

পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (ঘচঞ)

১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (Non-Proliferation Treaty ev NPT) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য ছিলÑ পরমাণু অস্ত্রধারী দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করা। শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা। পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করা। যদিও এই চুক্তি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ গ্রহণ করেছে, তবে কিছু দেশ যেমনÑ ভারত, পাকিস্তান এবং ইসরাইল এটি স্বাক্ষর করেনি। আবার উত্তর কোরিয়া চুক্তি থেকে সরে গিয়ে নিজের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ ঘচঞ-এর কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

পরমাণু পরীক্ষা নিষিদ্ধ চুক্তি (CTBT) 

১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল পরিবেশ রক্ষা এবং নতুন পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া থামানো। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক বড় দেশ এখনো এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)

ওঅঊঅ বিভিন্ন দেশের পরমাণু কার্যক্রম তদারকি করে। এটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যে, দেশগুলো তাদের পরমাণু শক্তি শুধু শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম অনেক সময় রাজনৈতিক চাপে ব্যাহত হয়, বিশেষ করে বড় শক্তিধর দেশগুলোর প্রভাবের কারণে।

পরমাণু শক্তি এবং সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি

পরমাণু শক্তির আরেকটি বড় হুমকি হলো এর অপব্যবহার, বিশেষ করে সন্ত্রাসীদের হাতে এর চলে যাওয়ার আশঙ্কা। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা একমত যে, যদি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পরমাণু অস্ত্র বা পরমাণু উপকরণ পায়, তবে এর ফল হবে ভয়াবহ।

অসুরক্ষিত পরমাণু উপকরণ 

বিশ্বজুড়ে এখনো অনেক পরমাণু উপকরণ যথেষ্ট সুরক্ষিত নয়। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লুটোনিয়াম এবং ইউরেনিয়ামের মতো উপাদান চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই উপাদানগুলোকে যদি সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করতে পারে, তবে তারা সহজেই একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে।

সাইবার হামলার ঝুঁকি 

বর্তমান সময়ে সাইবার নিরাপত্তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় যদি সাইবার হামলা চালানো হয় তবে এটি বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। অনেক দেশ এখন তাদের পরমাণু অবকাঠামো সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এই হুমকি পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয়নি।

পরমাণু শক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমাধান

পরমাণু শক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি কার্যকর সমাধান প্রস্তাব করতে হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথমত, পরমাণু শক্তির নিরাপদ ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক চুক্তি ও উদ্যোগগুলোর কার্যকারিতা আরও সুদৃঢ় করতে হবে। পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (ঘচঞ) এবং পরমাণু পরীক্ষা নিষিদ্ধ চুক্তি (ঈঞইঞ)-এর মতো চুক্তিগুলোর আওতায় আরও বেশি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বর্তমান চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন আরও দৃঢ় করতে হবে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (ওঅঊঅ)-এর কার্যক্রম আরও স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী করতে হবে।

যাতে তারা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পরমাণু শক্তির নিরাপদ ব্যবহারের তদারকি করতে পারে। সন্ত্রাসী সংগঠনের হাতে পরমাণু অস্ত্র বা উপকরণ যাওয়ার সম্ভাবনা রোধ করার জন্য পরমাণু উপকরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে হবে। প্রতিটি দেশকে তাদের পরমাণু নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে উৎসাহিত করা উচিত। আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থাও গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সাইবার আক্রমণের শিকার না হয়। অপরদিকে, পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের দিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্রের সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি নতুন অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরমাণু শক্তির সুফলগুলো মানবজাতির কল্যাণে কাজে লাগানো সম্ভব হতে পারে। ফলে পৃথিবী থেকে পরমাণু শক্তির বিপজ্জনক ব্যবহারের ঝুঁকি কমানো যাবে।

পরমাণু শক্তি মানবজাতির জন্য এক অনন্য সম্পদ, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে পৃথিবীকে উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়ে নেয়া যেতে পারে। তবে এর সঙ্গে ঝুঁকিও অনেক। অপব্যবহার বা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এটি সমূহ ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। পরমাণু শক্তি এবং বৈশ্বিক রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল প্রযুক্তির প্রশ্ন নয়, বরং নৈতিকতার বিষয়। শক্তির এই অমূল্য উৎস মানবকল্যাণে কাজে লাগাতে হলে আমাদের দায়িত্বশীল হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে হবে।

লেখক : সমাজকর্মী





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত