নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক ‘তড়িঘড়ি করে’ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের উদ্যোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার নিজের সংগঠন নারীপক্ষ বাংলাদেশের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় এ উদ্বেগ জানান।
বার্তায় শিরীন হক বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা চাচ্ছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধন করে একটা অধ্যাদেশ জারি করতে। এটার ব্যাপারে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন বেশ কয়েকটি কারণে। একটি হলো, আমরা তড়িঘড়ি করে এই আইন সংশোধনের পক্ষে নই।’
মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে এই আইন সংশোধন করার বিরোধিতা করেছেন শিরীন হক। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে এ মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা দেশে নেই। তাঁর অনুপস্থিতিতে এই আইন করাটা শোভনও নয়।’
শাস্তি বৃদ্ধি করে আইন সংশোধনের বিষয়েও দ্বিমত পোষণ করেছেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইন সংশোধনের যে বিষয়বস্তু, শাস্তি বৃদ্ধি করে অপরাধ দমন করা হবে, তার সঙ্গে আমরা একেবারেই একমত নই। শাস্তি বৃদ্ধি কোনোদিনই কোনো অপরাধ দমনে সাহায্য করেনি। আমরা বলতে চাই, নারী আন্দোলন আইনের শাসন চায়। কিন্তু তার মানে এই নয়, আইন সংশোধন করে শাস্তি বৃদ্ধি করে কিছু অপরাধীকে দমন করাটাই আইনের শাসন।’
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন নারী অধিকার আন্দোলনকর্মী শিরীন হক। বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সরকারপ্রধান এ ব্যাপারে একটা শক্ত ভূমিকা রাখবেন। এভাবে তড়িঘড়ি করে তাঁর আমলে আইন সংশোধন যেন না হয়।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অল্প সময়ের মধ্যে নারী ও শিশুধর্ষণ ও যৌন হয়রানির বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে আসায় জনমনে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংস্কারে উদ্যোগের কথা জানান।