জুলাই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। আন্দোলনে ৬০ শতাংশই ছিলেন মেয়েরা। নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া এই আন্দোলন সফল হতো না। তবে আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে নারীদের অবদান মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে লড়াকু নারীদের ভূমিকা ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে নারী অধিকার সংগঠন ‘কথা বলো নারী’।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যে নারী আন্দোলনকারীদের তালিকা হবে। আমরা এই তালিকাটা করলে জানতে পারব, এই অভ্যুত্থানে কার কী ক্ষতি হয়েছে। এই তালিকায় এটাও থাকবে, কে কী পড়াশোনা করেছে, কার কী পেশা। দক্ষতা, মেধা এটাকে মাথায় রেখে আমরা পরিকল্পনা করতে পারব।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দল সম্ভাব্য ফ্যাসিস্ট। কারণ, দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। আমরা সংরক্ষিত আসন করব না। আমরা সংরক্ষিত মহিলা আসন নয়, সব আসনে সরাসরি নির্বাচন চাই। তবে এটা হতে পারে, ১০০টা আসনে শুধু নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, একাত্তরে নারীরা শুধু ধর্ষিত হয়েছে, তা নয়। তাদের অনেক অবদান ছিল। একাত্তরের পরে নারীদের যে অবস্থা হয়েছিল, চব্বিশের আন্দোলনের পরেও যেন নারীদের সে রকম অবস্থা না হয়।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘বিগত সময়ে সংরক্ষিত নারী আসন নয়, ওটা ছিল সাজানো নারী আসন। পুতুল নারী আসন। আমরা সে রকম চাই না। তবে সংরক্ষিত নারী আসন লাগবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতিমা বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি। একটা অভ্যুত্থানে মেয়েদের প্রায় ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণ ছিল। তারপরে কী করে নারীদের এত বাজে অবস্থা হলো। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমি খেয়াল করি, মিছিলে ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণ থাকত মেয়েদের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা বসে থাকত। আর ছেলেরা দেখা যেত মিছিলের আগে আসত। মিছিল করে চলে যেত।’