চীন ও পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত এবং অর্থনীতিবিদ লুৎফে সিদ্দিকী এই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি এমন এক সময়ে এই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, যখন বাংলাদেশের সঙ্গে নিকট প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্ক কিছুটা তিক্ত।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে আরও বেশি সংযোগ দেখতে চাই।’ ভারত-বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও, এখন বাংলাদেশ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে খুবই উৎসাহী। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টায় চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চীন সফরে গেছেন।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘আমরা আরও বেশি দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ব। আজকের দিনে বহুপাক্ষিকতাই মূলমন্ত্র।’ তিনি চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ আশা করছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সৌর বিদ্যুতের মতো খাতগুলোতে চীনের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বেশ তিক্ত। ঢাকা চায় ভারত নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাক। কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তা ও সংবাদমাধ্যমগুলোর অভিযোগ, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা সফর করেছেন। তবে তা সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
এদিকে, বাংলাদেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে লড়াই করছে। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তারপর থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।