Homeজাতীয়কতটুকু সফল হতে যাচ্ছে গাজার যুদ্ধ বিরতি?

কতটুকু সফল হতে যাচ্ছে গাজার যুদ্ধ বিরতি?


অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মধ্যস্থতাকারীরা বুধবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছেন, যা গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের শর্ত বহন করছে। ইসরায়েল বা হামাস কেউই এখনো এই প্রস্তাব নিয়ে প্রকাশ্যে অবস্থান জানায়নি। ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা হামাসের চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

হামাস মঙ্গলবার বলেছে যে আলোচনাগুলো “চূড়ান্ত পর্যায়ে” রয়েছে। তবে পূর্বের আলোচনায় সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে উভয় পক্ষ এই চুক্তি মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।

আলোচনার অবস্থা কী?

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাস “চুক্তির দ্বারপ্রান্তে” রয়েছে। এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করবে এবং বন্দিদের বিনিময় ঘটাবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা দীর্ঘ সময় ধরে চুক্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হলেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অগ্রগতি হয়েছে।

“রবিবার যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর একটি চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়েছে,” বলেন ব্লিঙ্কেন। “এখন বল হামাসের কোর্টে।”

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, মধ্যস্থতাকারীরা উভয় পক্ষের বেশ কিছু মতপার্থক্য কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন এবং এখন তারা “চুক্তির চূড়ান্ত খুঁটিনাটি নিয়ে কাজ করছেন।”

ইসরায়েলি এবং হামাস উভয় পক্ষই ইঙ্গিত দিয়েছে যে, অন্য পক্ষ সম্মত হলে তারা চুক্তি এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।

সোমবার, এক হামাস কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল যদি তাদের অবস্থান হঠাৎ না বদলায়, তবে কয়েক দিনের মধ্যেই চুক্তি হতে পারে। মঙ্গলবার, এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য প্রস্তুত এবং হামাসের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রস্তাবে কী বলা হয়েছে?

আলোচনার সংবেদনশীলতার কারণে কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি খুব বেশি খোলাসা করেননি।

একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, চুক্তির কাঠামোটি মে ও জুলাই মাসে আলোচিত পূর্ববর্তী প্রস্তাবের অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে। সেই প্রস্তাবে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা ধীরে ধীরে গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে এবং হামাস বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেবে।

ইসরায়েল অন্তত ১০০ জন বাকি বন্দির মধ্যে কিছু বন্দিকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে। এই বন্দিদের গাজায় আটকে রাখা হয়েছে অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার পর, যা যুদ্ধের সূত্রপাত করে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ধারণা, বাকি বন্দিদের মধ্যে প্রায় ৩৫ জন মৃত।

হামাস চায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে, পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশ নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ে হামাস ৩৩ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েল শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, তবে এটি নির্ভর করবে মুক্তি পাওয়া বন্দিদের সংখ্যার ওপর।

আলোচনায় অগ্রগতি কেন হয়েছে?

কিছু কর্মকর্তার মতে, ২০ জানুয়ারি নতুন মার্কিন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার আগে সিদ্ধান্ত দ্রুততর করার চাপ রয়েছে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প সতর্ক করেছেন যে, বন্দিদের মুক্তি না হলে “ভয়াবহ পরিস্থিতি” তৈরি হবে। তার মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ কাতার ও ইসরায়েলে সফর করেছেন।

এছাড়া, ইসরায়েল সম্প্রতি লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি পৃথক যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে। অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের হামলার পরপরই হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের দিকে রকেট নিক্ষেপ শুরু করে। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে হিজবুল্লাহ। নভেম্বর মাসে তারা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়, যা হামাসকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত